ফারুক খান : বুট পরা মন্ত্রী, স্যুট পরা বিবৃতি, হাঁটু ভরা বুদ্ধি

এবার মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনের কথা শুনে আমার মাথায় তিনটি পরিবর্তনের কথা অবধারিতই মনে হয়েছিল। ভেবেছিলাম বাণিজ্য মন্ত্রী ফারুক খান ও তথ্য মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদকে সরিয়ে নেয়া হবে, এবং যেহেতু একজন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়োগ হয়েছে ( কার পরামর্শে এ নিয়োগ কে জানে, কিন্তু ভদ্রলোক যে আরেক জাফরউল্লাহর মতো অকালকুষ্মাণ্ড ও বদস্ট্র্যাটেজিক নিয়োগ তাতে কোনো সন্দেহ নেই) কাজেই এ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী অবশ্যই অপসারিত হবেন। কিন্তু বাণিজ্য ও তথ্য দেখলাম বহাল থাকলেন। আর গত কয়েকদিন দ্রব্যমূল্য ও রোজার মাসের আগমন এই প্রসঙ্গে আবার চিরাচরিত অকেজো মূল্যতালিকা ঝোলানো, মানুষকে খাদ্যাভ্যাস শেখানো, বাজার করার পদ্ধতি বলে দেয়া, সে এক তেলেসমাতি! কারণ ফারুক সাহেব হঠাৎ-ই দেখতে পেলেন রোজা এসে গেছে কিন্তু তিনি তো এতদিন দ্রব্যমূল্য নিয়ে কোনো কাজ করেননি, বিডিআর নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, অভিযোগ আছে তিনি গত বাজেটে যে সব পণ্যের শুল্ক বাড়বে তা ঠিক কত বাড়বে তা কাছের ব্যবসায়ীদের কাছে ফাঁস করেছেন ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে, বিবৃতির পর বিবৃতি, টকশোয়ের পর টকশো, সময় কোথায় খানের, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সবাইকে হুশিয়ার করলেন, অথচ চ্যাম্পিয়নকে কিছুই বললেন না। জানি না কার প্রাণ ভোমরা কোথায় বাঁধা আছে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার, আর্মিঅবআর্মিদের পরিবেষ্টনে আমলাদের তেলঝোলেই কেন যেন তিনি বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন, এই হাসিনা আমাদের অপরিচিত, তিনি কি বড় বেশি নিরাপদ হতে চাইছেন, বাবার ভুলের পুনরাবৃত্তি করতে চাইছেন না? চাইতেই পারেন, কিন্তু খেয়াল রাখা উচিত যেন কোনো মূল্যেই জনগণ থেকে দূরে না সরেন। এবং সেটা করার একটি বড় জায়গা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ যার সবচেয়ে বড় শত্রু গত ৭ বছরের সিন্ডিকেট, আর ফারুক খান সেখানে হাত দিতেই ভয় পাচ্ছেন, বা চাইছেন না, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীরও যদি একই মনোভাব থাকে, তবে আমাদেরই ফাটা কপাল, আর যে তথ্যমন্ত্রী হাসিনার হাতে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মিডিয়াগুলো যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়বে, তারা আগপাশতলা বোঝারও মুরোদও তার নেই, জনসংযোগের নাম দিয়ে ফালুর সাথে করমর্দন, তখন দেখা যাবে কালাম ভাইয়ের লেজেগোবরে অবস্থা। সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সময়ে হাল ধরুন।

মাসুদ করিম

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।

৮ comments

  1. রায়হান রশিদ - ১৫ আগস্ট ২০০৯ (২:২৫ অপরাহ্ণ)

    একজন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নিয়োগ হয়েছে ( কার পরামর্শে এ নিয়োগ কে জানে, কিন্তু ভদ্রলোক যে আরেক জাফরউল্লাহর মতো অকালকুষ্মাণ্ড ও বদস্ট্র্যাটেজিক নিয়োগ তাতে কোনো সন্দেহ নেই)

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা পরিষদের সবার নাম হাতের কাছে নেই। কেউ কি নামগুলো তুলে দিতে পারেন এখানে? তাহলে নাম দেখে এবং তাদের অতীতের কীর্তিকলাপ আলোচনা করে সবাই মিলে একটা অনুসিদ্ধান্তে আসতে পারতাম ঠিক কি “উপদেশ” তাদের পক্ষে দেয়া সম্ভব আসলে। কবির ভাষায় জানা সহজ হতো – শাসনব্যবস্থার প্রধান একজন ‘মার্জার’ কিনা, কিংবা তাঁর খাজাঞ্চিখানা ‘ইঁদুর’-দের হাতে ন্যস্ত কিনা, কিংবা তাঁর মন্ত্রণাসভা ‘শেয়াল’-রা আলোকিত করে রেখেছে কিনা!

    • মাসুদ করিম - ১৬ আগস্ট ২০০৯ (২:১১ পূর্বাহ্ণ)

      যে কয়েকজনের নাম প্রায় শুনি : এইচ টি ইমাম, মসিউর রহমান, আলাউদ্দিন আহমেদ, শেখ হাসিনার একজন চিকিৎসক–নামটা মনে পড়ছে না, গ্যাস সম্পদ বিষয়ে খুবই বিতর্কিত একজন ব্যক্তিত্ব–নাম মনে পড়ছে না এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা গওহর রিজভী। খুঁজে দেখি কোথাও সব নাম একসাথে পাই কিনা।

      • আরমান রশিদ - ১৯ আগস্ট ২০০৯ (৬:২৫ অপরাহ্ণ)

        গ্যাস সম্পদ বিষয়ে খুবই বিতর্কিত একজন ব্যক্তিত্ব–

        তোফিক এ এলাহির কথা বলছেন বোধহয়। শুনেছি এই উপদেষ্টারা মন্ত্রীর পদমর্যাদা ভোগ করেন তবু সরকারি খাতায় তাদের নামগুলি উঠেছে কিনা তা ওয়েব সাইট দেখে বোঝা গেল না। অন্যান্য মন্ত্রীদের তালিকা সরকারি এই সাইটটিতে দেয়া হয়েছে।

  2. আরমান রশিদ - ১৯ আগস্ট ২০০৯ (৭:০৫ অপরাহ্ণ)

    আরো কিছুক্ষন ঘাটাঘাটির পর জানতে পারলাম ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আজো রাষ্ট্রপতির পদে বহাল আছেন। এখানে দেখুন।

    সাম্প্রতিক প্রজ্ঞাপনগুলি ঘেটে কয়েকজন উপদেষ্টার নাম পেলাম। এখানে এখানে দেখুন। তবে এদুটিতে তোফিক এ এলাহির নাম পেলাম না। আলোচনার সুবিধার্থে নামগুলি নিচে তুলে দিলামঃ
    ১। মেজর জেনারেল (অবঃ) তারিক আহমেদ সিদ্দিক
    ২। এইচ টি ইমাম
    ৩। ডঃ মসিউর রহমান
    ৪। ডাঃ মদাচ্ছের আলী
    ৫। ডঃ আলাউদ্দিন আহমেদ

    • রায়হান রশিদ - ১৯ আগস্ট ২০০৯ (৭:১৭ অপরাহ্ণ)

      আরো কিছুক্ষন ঘাটাঘাটির পর জানতে পারলাম ডঃ ইয়াজ উদ্দিন আজো রাষ্ট্রপতির পদে বহাল আছেন। এখানে দেখুন।

      আলোকিত হবার মত তথ্য। অনুরোধ করছি এখনই ওয়েবপেজটার তারিখসহ একটা স্ক্রিন শট নিয়ে রাখার। আর সেটা নিয়ে একটা ছোট্ট পোস্ট দিলে এমনকি আরও ভাল হয়।
      ধন্যবাদ আরমান।

    • মাসুদ করিম - ২০ আগস্ট ২০০৯ (২:৫২ পূর্বাহ্ণ)

      ১। মেজর জেনারেল (অবঃ) তারিক আহমেদ সিদ্দিক : প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা।
      ২। এইচ টি ইমাম : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আভ্যন্তরীন কার্যাবলির সমন্বয়কারী ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়সহ আটটি বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করছেন তিনি।
      ৩। ডঃ মসিউর রহমান : অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ও পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়কারীসহ ছয়টি দায়িত্ব।
      ৪। ডাঃ মোদাচ্ছের আলী : স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় পাঁচটি বিষয়।
      ৫। ডঃ আলাউদ্দিন আহমেদ : শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নসহ চারটি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তি ও জোট আমলে চাকুরিচ্যুত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
      ৬।তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী : বিদ্যুৎ ও জ্বালানী।
      ৭।গওহর রিজভী : আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
      আজকের প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদন থেকে তথ্যগুলো পেলাম : উপদেষ্টাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই, নির্বাহী কাজ নিয়ে প্রশ্ন

  3. মাহতাব - ৩০ আগস্ট ২০০৯ (৯:৩৫ পূর্বাহ্ণ)

    বিএনপি-তে নাজমুল হুদা, আওয়ামী লীগে এই ফারুক খান — দুজনই বাজে কথার দোকান।

  4. মাসুদ করিম - ২৭ এপ্রিল ২০১০ (৯:৪৯ পূর্বাহ্ণ)

    মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারতীয় ছবি আমদানি করা যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কয়েকদিন আগে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান ভারতীয় ছবি আমদানি ও প্রদর্শনের সিদ্ধান্তের কথা জানান। এ কারণে গতকালের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্যমন্ত্রীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সরকার এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে জানান। বৈঠক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

    খবরের লিন্ক এখানে। আরো পড়ুন প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.