বিএনপি

বিএনপির গায়ের জোর, মা চোর ছেলে চোর। ২০০১-২০০৬ সময়কালের বিএনপিকে নিয়ে যদি এমন কথা বলি, তবে ২০০৭-২০০৮ সময়কালের বিএনপির জন্য বলতে হয় — বিএনপির ধানের শীষ, জিয়াউর রহমানের দিন শেষ। কিন্তু ভোট বিএনপির অনেক, এই ভোট পেতে বিএনপির হয়তো সামনেও কোনো অসুবিধা হবে না। তাহলে বিএনপি কি রাজপথে নেমে এই সরকার ফেলে দিতে পারবে ২০১৪-এর আগে, না কি বিএনপি ২০১৪-এর নির্বাচন জিতে আবার বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসতে পারবে? কিন্তু রাজপথে নামতে কি পারবে বিএনপি, দলটাকে গুছাতে কি পারবে বিএনপি? আমার মনে হয় না। আমার মনে হয় হাজার চেষ্টা করেও আর বিএনপি তার হারানো জায়গায় ফিরে আসতে পারবে না।
কিছু অতি কাল্পনিক ঘটনা যদি ঘটে যায়।
— খালেদা জিয়া নিজেই সেনানিবাস ছেড়ে বেরিয়ে এলেন।
— জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা অবৈধ ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া।
— জিয়া হত্যার বিচার চাই রাজপথে মিছিল করে বিএনপি।
— ক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে কালিমালিপ্ত করেছে জিয়াউর রহমান, আমি আর তার আদর্শে বিশ্বাসী নই খালেদা জিয়া এ মর্মে পত্রিকায় বিবৃতি দিলেন। জিয়াউর রহমানের সাথে মৃত্যুপর বিবাহবিচ্ছেদ মামলা নথিবদ্ধ করেন খালেদা জিয়া।
— তারেক কোকো আর আমার সন্তান নয়।
শেখ হাসিনা সম্পূর্ণ নতুন একটি টিম নিয়ে সরকার ও দল চালাচ্ছেন। ব্যর্থতা-সফলতা সৃষ্টিশীল মানুষেরই দুটি অনিবার্য অবস্থান। তাই শেখ হাসিনার এই কাজ আগ্রহ উদ্দীপক।
খালেদা জিয়া এক অমোঘ বন্ধনে শেখ হাসিনার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন, চারিদিকের মানুষ তাদের জড়িয়ে রেখেছেন। কাজেই এবার খালেদা জিয়ার কিছু করার পালা। এই কাল্পনিক পঞ্চশীল গ্রহণ করে যদি নতুন দলের নামকরণ তাকে বিএনপি (খালেদা) করতেও হয়, তাই তার করা উচিত।
আর এই কাল্পনিক পন্থা গৃহীত না হয়ে, বিএনপি যদি আগের মতোই চলে, তবে একটি উগ্র জাতীয়তাবাদী দলের ভাগ্যে ভবিষ্যতে যা ঘটবে, তার ঘোষিত মৃত্যুর ক্রমপঞ্জি লেখা হচ্ছে কোথাও, যা পরবর্তীতে একে একে গোচরে আসবে আমাদের।

মাসুদ করিম

লেখক। যদিও তার মৃত্যু হয়েছে। পাঠক। যেহেতু সে পুনর্জন্ম ঘটাতে পারে। সমালোচক। কারণ জীবন ধারন তাই করে তোলে আমাদের। আমার টুইট অনুসরণ করুন, আমার টুইট আমাকে বুঝতে অবদান রাখে। নিচের আইকনগুলো দিতে পারে আমার সাথে যোগাযোগের, আমাকে পাঠের ও আমাকে অনুসরণের একগুচ্ছ মাধ্যম।

৩১ comments

  1. মাসুদ করিম - ২৬ নভেম্বর ২০০৯ (১২:৩৩ অপরাহ্ণ)

    আজকের সমকালে বিএনপির বর্তমান অবস্থান নিয়ে পড়ুন এম আবদুল হাফিজের মতামত।

    বিএনপির দুর্দিন কি কাটবে?
    এম আবদুল হাফিজ

    দুর্দিন যাচ্ছে দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা এককালের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী দল বিএনপির। অভ্যন্তরীণ কোন্দল, শীর্ষ নেতাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব, সিদ্ধান্তহীনতা ও হতাশা বিএনপিকে কুরে কুরে খাচ্ছে। কোথাও কোথাও উলি্লখিত উপসর্গগুলোর সহিংস বহিঃপ্রকাশও ঘটছে। এরই মধ্যে দলের কাউন্সিল অধিবেশনের তারিখ ধার্য হয়েছে ৮ ডিসেম্বর। যার নিয়ন্ত্রণে এখনও পর্যন্ত রয়েছেন বর্তমান মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার। কাউন্সিল অধিবেশনের সাফল্য নিয়ে নানামুখী গুঞ্জন রয়েছে। কেননা তৃণ পর্যায়েই এ পর্যন্ত সর্বজনগ্রাহ্য কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া অসমাপ্ত অথবা বিতর্কিত অথবা পাল্টাপাল্টি কমিটির উপস্থিতিতে বিস্ফোরণোন্মুখ। যদিও প্রাক-কাউন্সিল এসব অসঙ্গতি বা মতপার্থক্যের কথা স্বীকার করছেন না ক্ষুব্ধ চেয়ারপারসনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
    তবু এই অস্বীকৃতির ভেতর দিয়েই ঘটে গেল চট্টগ্রাম বিএনপিতে খসরু-নোমান গ্রুপের মধ্যে তুলকালাম কাণ্ড। বিভিন্ন আকারে অন্যত্রও প্রায় প্রতিদিনই ঘটে যাচ্ছে ‘আগামীতে সম্ভাবনাময়’ এই দলটির নেতৃত্ব দখলের মহড়া। তবে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব এই মহড়ায়ই সীমাবদ্ধ নয়। বিএনপিতে নেতৃত্ব নিয়ে দলীয় বিভাজন ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে বিভাগ থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিএনপির অঙ্গ সংগঠনগুলোর অভ্যন্তরেও। বিএনপি রাজনীতিতে সক্রিয় ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিই আজ পর্যন্ত ঘোষিত হয়নি। এই সংগঠনগুলোতেও আগামীতে যে কোন্দল ছড়িয়ে পড়বে তা বলাই বাহুল্য।
    কোন্দল বা নেতৃত্বের লড়াই_ যে নামেই আখ্যায়িত করি না কেন একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলে তা হতে থাকবে, এতে অস্বাভাবিকতা কিছু নেই। আওয়ামী লীগেও এক সময় তা হয়েছে।
    এও স্বাভাবিক যে, বিএনপির দুঃসময় দলের কোনো কোনো প্রতিপক্ষের জন্য উপভোগ্য। সংবাদমাধ্যমের একটি অংশও সরস এবং তির্যক মন্তব্য করছে, কাউন্সিলকে ঘিরে বিএনপির নেতৃত্বে অসহায়ত্ব নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন লিখেছে। রাজনীতিতে হারজিতের পালাবদল আছে। পরাজয়ের পালা অত্যন্ত তিক্ত। কোনো দলের জন্য জয়ের পালা এলে মানুষ সে দলটির জন্য প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়, আকারে-ইঙ্গিতে দলটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করতে ভালোবাসে। পরাজয় তার উল্টোটিই ঘটে। পরাজিতের খোঁজ পর্যন্ত নিতে কেউ উৎসাহী হয় না।
    ইংরেজিতে একটি আপ্তবাক্য আছে : ঞযব ংঁপপবংং যধং সধহু ভধঃযবৎং, যিরষব ঃযব ভধরষঁৎব রং ড়ৎঢ়যধহবফ ধঃ রঃং নরৎঃয. আমাদের দেশে সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে মানুষের প্রতিক্রিয়া যেন এই আপ্তবাক্যটিরই প্রতিফলন। তাই বিএনপির আজকের দুরবস্থা নিয়ে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।
    তবে আশ্চর্য হওয়ার অনেক কিছুই আছে যখন লোকে পঁচাত্তর-পরবর্তী আওয়ামী লীগের ভাগ্য বিপর্যয় বেমালুম ভুলে যায়। সে সময়ের অব্যবহিত পরেই শুধু নয়, ‘৯১ সালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পরও আওয়ামী লীগের বেহাল অবস্থা আজকের বিএনপির দুরবস্থা থেকেই শোচনীয় ছিল। সত্তরের দশকের শেষভাবে প্রায় ভগ্নদশা আওয়ামী লীগ যখন পুনর্গঠিত হওয়ার প্রচেষ্টারত, সেই আওয়ামী লীগও মতপথ-আদর্শ ও কৌশল নিয়ে শতধাবিভক্ত। যে কারণেই হোক আওয়ামী লীগের সভাগুলো তখন মতিঝিলের ইডেন হোটেলে হতো এবং সেখানকার তাণ্ডব দর্শনে কৌতূহলী দর্শকরা আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে পারত না এবং নেতাকর্মীদের কলহ থামাতে প্রায়ই পুলিশের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হতো। এমনই এক পরিপ্রেক্ষিতের বিপরীতে দলের ফাটল মেরামতে ভারতে আশ্রিত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনতে হয়েছিল দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তার হাতে ন্যস্ত করতে।
    তারপরও দীর্ঘদিন অনেক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়ে আওয়ামী লীগের সম্মুখযাত্রা কুসুমাস্তীর্ণ হয়নি। সে সময় আওয়ামী লীগেরই অনেক নেতাকর্মী প্রতিপক্ষের শিবিরে। বিএনপির আজকের দুঃসময়ে অন্তত দলের কোনো নেতাকর্মীর প্রতিপক্ষ শিবিরে ভেড়ার সংবাদ জানা যায়নি। মনে আছে, আশির দশকের কোনো এক সময়ে রকেট স্টিমারযোগে খুলনা গিয়েছিলাম। ভোররাতের দিকে রকেট বরিশালে পেঁৗছলে কিছু শোরগোলে ঘুম ভেঙে যায়। জানতাম না যে ওই স্টিমারে শেখ হাসিনাও ছিলেন। পরে জানলাম যে, বরিশালে তার সাংগঠনিক কর্মসূচি আছে। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে মাত্র ২০-২২ জন জয় বাংলা ধ্বনির সঙ্গে সমবেত হয়েছিল। বিএনপির জনপ্রিয়তা এখনও সেই পর্যায়ে নেমে আসেনি। বিএনপি নেত্রী এখনও কয়েক হাজার গাড়ির বহর সহকারে তারেক রহমানের জন্মোৎসবে বগুড়া যান। অর্থাৎ নির্বাচনী পরাজয় ও দলীয় বিশৃঙ্খলা সত্ত্বেও খালেদা জিয়া এখনও শেখ হাসিনার কঠিনতম সময়ে পেঁৗছেননি।
    রাজনৈতিক দলের উত্থান-পতন আছেই। একবার পতন হলে তার অর্থ এই নয় যে তা কোনো স্থায়ী পতন। কৌশল পরিবর্তন বা উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে দল আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারে। তা সত্ত্বেও বিএনপির ক্ষেত্রে দলের সেই পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় আছে। তার কারণ দলের ছত্রভঙ্গ অবস্থা; আত্মকলহ বা বিশৃঙ্খল অবস্থা নয়। সে অবস্থায় পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। কিন্তু খালেদা জিয়ার সমস্যা অন্যত্র। সেটি তার ব্যক্তিত্ব ও ব্যক্তিরসায়ন সংক্রান্ত। তার মধ্যে কোনো অন্তর্দর্শন (ওহঃৎড়ংঢ়বপঃরড়হ) নেই। তিনি উপলব্ধিই করেন না যে, তিনি তার নেতৃত্বে বা নীতিনির্ধারণে কোনো ভুল করেছেন বা করতে পারেন। না তার সন্তানরা কোনো ভুল করেছে। এখানে তার সন্তানবৎসল চরিত্রটাই মুখ্য। সন্তানদের অন্ধ স্নেহ দিতে গিয়ে তিনি দেশ বা দশের কী অমঙ্গল ডেকে এনেছেন, সে বোধশক্তিই তার নেই।
    খালেদা জিয়া তার সর্বশেষ শাসনামলে সন্তান তারেক রহমানের সঙ্গে নিজের রাষ্ট্র প্রদত্ত ক্ষমতার যে সমীকরণ সৃষ্টি করেছিলেন এবং তাতে দেশ ও দেশবাসীর যে প্রভূত অমঙ্গল সাধিত হয়েছিল সে জন্য তার কোনো অনুশোচনাই নেই এবং তার সে ভুল থেকে তিনি কোনো শিক্ষাই গ্রহণ করেননি। সন্তান বা স্বজনপ্রীতির ব্যাপারে শেখ হাসিনাও হয়তো অভিন্ন রাজনৈতিক দর্শনের ধারক, কিন্তু তিনি তার প্রতিঘাত (ইধপশষধংয) বুঝতে সক্ষম। তাই তিনি দলের হয়ে আওয়ামী লীগের ভুলের কথা বারবার স্বীকার করেছেন অন্তত নির্বাচনের প্রাক্কালে এবং খানিকটা সংশোধনের চেষ্টাও করেছেন নিজকে এবং দলকে।

    ধারণা ছিল যে, একচ্ছত্র নিরবচ্ছিন্ন ক্ষমতা ভোগের পর এক-এগারোর প্রচণ্ড ঘা খাওয়ার পর খালেদা জিয়াও কিছু পরিবর্তিত শৈলীতে হলেও তেমনই একটা পদক্ষেপ নেবেন তার পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে। নিদেনপক্ষে স্নেহের সন্তানদ্বয়কে অবশ্যই রাজনীতির নোংরামি থেকে সযত্নে সরিয়ে রেখে তার বাৎসল্যের পরিচয় দেবেন। তার জ্যেষ্ঠ সন্তানও তো বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য কারামুক্ত হওয়ার প্রাক্কালে এমনই মুচলেকা দিয়েছিলেন যে, তিনি জীবনে আর রাজনীতি করবেন না। কিন্তু সমগ্র দেশকে অবাক করে দিয়ে সম্প্রতি খালেদা জিয়া যা করলেন বা ভবিষ্যৎ বিএনপি রাজনীতি সম্পর্কে যে আভাসের ঘোষণা দিলেন তাতেই শুধু বোঝা যায় যে, বিএনপির সমস্যা কোথায় এবং কী কারণে বিএনপি দুঃসময় অতিক্রম করছে। সে কারণ অবশ্যই শুধু দলের অভ্যন্তরীণ কলহ বা কোন্দল নয়। সেগুলোর অবসান ঘটানো যায় কিন্তু ক্ষমতার আসক্তি দূর করা যায় না_ তাও আবার কাঙ্ক্ষিত বৃত্তের মধ্যে তা কুক্ষিগত করে রাখার আসক্তি।
    সম্প্রতি লন্ডনে চিকিৎসারত তারেক রহমানের ৪৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির ঘাঁটি বগুড়ায় খালেদা জিয়া তার জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেককেই আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির রাজনীতির উত্তরাধিকার অর্পণ করেছেন এবং তার সত্বরই দায়িত্ব পালনার্থে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন তারেকের বিরুদ্ধে এখনও মামলা ঝুলে থাকা সত্ত্বেও। এখন এটা প্রায় পরিষ্কার যে, বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতি-প্রকৃতি কী হবে। অনেকের মতে, বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ে ভালো রাজনীতিক আছেন, যারা গুণগতভাবে আওয়ামী লীগের ওই পর্যায়ের নেতাদের থেকে পরিপকস্ফ এবং দল পরিচালনায় দক্ষ। তা সত্ত্বেও বিএনপির নেতৃত্বে শুধু খালেদা জিয়ার একগুঁয়েমি ও ঔদ্ধত্যের কারণে একজন অকালপকস্ফ দুর্নীতিপরায়ণ এবং অপরাধপ্রবণ যুবকের হাতে চলে যাওয়া দলের জন্য একটি ট্র্যাজেডি। বিএনপি হয়তো এ দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে আরও অনেক দিন টিকত এবং একটি যোগ্য আসনও করে নিতে পারত। কিন্তু তারেক রহমানের পুনঃঅধিষ্ঠানে সে সম্ভাবনার বিলুপ্তি ঘটল। স্মরণ থাকতে পারে যে, হাওয়া ভবনের অধিকর্তা হিসেবে চারদলীয় জোটের শাসনকালেই এই যুবকের অনেক দুর্নাম ছড়িয়ে পড়েছিল। অতঃপর এক-এগারো সংঘটিত হলে অসংখ্য দুর্নীতির অভিযোগে এই ইঁচড়েপাকা তারেক রহমান অন্য অপরাধীদের মতো কারান্তরালে প্রেরিত হন। ইদানীং ২১ আগস্টের পুনর্তদন্তের প্রক্রিয়ায় তার সাগরেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর জবানবন্দিতে অসংখ্য অপরাধে তারেকের সংশ্লিষ্টতার তথ্য বেরিয়ে আসছে। খালেদা জিয়া এগুলোকে তারেকের প্রত্যাবর্তনের পথ রুদ্ধ করার ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করছেন।
    আওয়ামী লীগের দেশ শাসনের একই প্রকার আদল দেখে যারা বিএনপির ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের আশু সম্ভাবনা দেখছিলেন তারা খালেদা জিয়ার এহেন পদক্ষেপ দর্শনে নিজেরাই হতাশ ও হতোদ্যম। তারেক রহমানের মতো একজন ক্রিমিনালকে যে দলের ভাগ্য পরিবর্তনে প্রয়োজন হয়, সে দলের আদৌ কি ভাগ্যোন্নয়ন সম্ভব?

    -এম আবদুল হাফিজ : সাবেক মহাপরিচালক বিআইআইএসএস ও কলাম লেখক

  2. মাসুদ করিম - ৩ ডিসেম্বর ২০০৯ (১০:৪০ অপরাহ্ণ)

    বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে জনকণ্ঠে স্বদেশ রায়ের উপসম্পাদকীয় : বিএনপির কাউন্সিল — প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি।

    যে কোন দেশের মধ্য ডানপন্থী দল হিসেবে কোন দলকে দাঁড়াতে গেলে ওই দলকে অবশ্যই জাতীয় বুর্জোয়া বা জাতীয় পুঁজির পক্ষের একটি দল হতে হয়। কিন্তু বিএনপির চরিত্র সব সময়েই জাতীয় পুঁজির বিপক্ষে। তারা দুর্নীতির মাধ্যমে জাতীয় পুঁজিকে ধ্বংস করে লুটেরা পুঁজির দিকে দেশকে ঠেলে দেয়। এ ছাড়া দেশে জঙ্গীবাদ ও জঙ্গীর অর্থ অবাধে প্রবেশ করার সুযোগ দিয়ে দেশে জাতীয় পুঁজি গড়ে ওঠার সব পথ তারা বন্ধ করে দেয়।

    বিস্তারিত পড়ুন

  3. Pingback: মুক্তাঙ্গন | ঘোষিত মৃত্যুর ক্রমপঞ্জি | মাসুদ করিম

  4. মাসুদ করিম - ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১০ (৬:০৪ অপরাহ্ণ)

    সেনানিবাসে বিএনপির জন্ম সম্বন্ধে আমরা সবাই জানি, মিজানুর রহমান খান এবার ৩ পর্বের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমাদের এবিষয়ে একটু গুছিয়ে জানাবেন বলেই মনে হচ্ছে, কোথাও নতুন কোনো আলো ফেলবেন এমন আশা করার কোনো কারণ নেই। যদিও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মন্তব্য করা যাবে মঙ্গলবার এর শেষ কিস্তি হাতে পেলে। আজকে আপাতত যাদুকাহিনীটাই শুনি

    আইজেনব্রাউন বেশ নাটকীয়ভাবে এবং যতটা সম্ভব রসিয়ে বিএনপির জন্মবৃত্তান্ত তুলে ধরেছেন। তাঁর কথায়, ‘১৯৭৮ সালে বিএনপির জন্মের সঙ্গে আমার গল্পের মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। পুরান ঢাকায় (যাদু মিয়ার বাসা ছিল মগবাজারে) আমাদের গোপন বৈঠকগুলো হতো। এর সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত ছিলাম। জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি ডান ও বামপন্থীদের মধ্যকার প্রবল সক্রিয় অংশকে একত্র করেছিলেন। একদিকে মোল্লা, অন্যদিকে বামপন্থী—উভয়ের কাছ থেকে তিনি পরামর্শ নিতেন। বিএনপি গঠন-প্রক্রিয়ায় সেনানিবাসে যেসব গোপন বৈঠক হয়েছিল, তার বিবরণ আমি পেতাম। সে বিষয়ে যিনি আমাকে অবহিত করতেন, তিনি ছিলেন একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ। যিনি পরবর্তীকালে জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভার সিনিয়র মিনিস্টার হয়েছিলেন।’
    আইজেনব্রাউন বলেছেন, বাম ও ডানপন্থীদের নিয়ে দল গঠনের একটি প্রক্রিয়া তখন ছিল। মন্তব্য চাওয়া হলে মওদুদ আহমদ গত ২১ আগস্ট প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেটা তো একদম ঠিক কথা। সেটাই ঘটেছিল। কারণ, ন্যাপ থেকে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা সংখ্যায় অনেক। প্রায় ৭০ জন এমপি ছিলেন ন্যাপ থেকেই। আপনি যদি তখনকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেন, তাহলে দেখবেন বামপন্থী দল থেকে বেশি এসেছিল। তখন শহীদ জিয়ার দলে আমরা যাঁদের বামপন্থী বলি, তাঁদের সংখ্যা এতটাই বেশি ছিল যে বিএনপিকে বলা যেত লেফট অব দ্য সেন্টার। যদিও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির যে বিধানটা বাহাত্তরের সংবিধানে ছিল, সেটা তিনি তুলে দিয়েছিলেন। ’
    ‘এক সপ্তাহ পরে ভ্রু নাচ’: আইজেনব্রাউন তাঁর সাক্ষাৎকারে নিশ্চিত করেন যে তিনি বিএনপির গঠন-প্রক্রিয়া সম্পর্কে ওয়াশিংটনকে বিস্তারিত অবহিত রাখতেন। তাঁর কথায়, ‘৭৮ সালের বসন্তে ঢাকার রাজনৈতিক বিষয় সম্পর্কে ওয়াশিংটনে প্রতিবেদন পাঠাতে পাঠাতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তখনকার বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে তেমন কোনো গল্প বলার কিছু নেই। কারণ, তখন রাজনীতি উন্মুক্ত ছিল না। তবে বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত কিছু ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে একটা সম্পর্ক বজায় রাখতে আমি সচেষ্ট ছিলাম।’ আইজেনব্রাউনের এই সাক্ষাৎকারে অবশ্য বিএনপির গঠন-প্রক্রিয়ার প্রশ্নে শুধু যাদু মিয়ার সঙ্গেই ওই সময় তাঁর নিবিড় যোগাযোগের কথা উল্লেখ করেছেন।
    বাংলাদেশের রাজনীতিতে মওলানা ভাসানীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন যাদু মিয়া। দুই প্রবীণ সাংবাদিক ফয়েজ আহমেদ ও এবিএম মূসা অবশ্য নিশ্চিত করেন যে ভাসানী তাঁকে নিয়ে সংশয়গ্রস্ত ছিলেন। সাবেক ন্যাপের (ভাসানী) নেতা রাশেদ খান মেনন এ বিষয়টি সমর্থন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি মিশ্র চরিত্রের ব্যক্তিত্ব ছিলেন। গোঁড়া বুর্জোয়া স্বভাবের সঙ্গে তাঁর একটি গণমুখী দিকও ছিল। এর পর থেকে অব্যাহতভাবে পাকিস্তানি সামরিক প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন। একাত্তরে কলকাতায় গেলেও তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি নিঃসন্দেহে বড় চরিত্র। সিনিয়র মিনিস্টার থাকাকালে হাসপাতালে আমি তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। ভাসানী ন্যাপের দক্ষিণপন্থী গ্রুপের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। বাহাত্তরের ১ অক্টোবর রাতে আমি ভাসানীর মুখে পাকিস্তানিদের দালালি করার জন্য জেলহাজতে থাকা যাদু মিয়াকে ভর্ৎসনা করতে শুনেছিলাম।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, শুধু যাদু মিয়া নন, সেদিন জেনারেল জিয়ার দল গঠনের সমর্থকদের অনেকেই বর্তমান সরকারের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে আছেন।
    জেনারেল জিয়া যখন সেনানিবাসের বাড়িতে গোপন রাজনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছিলেন, তখন এইচ এম এরশাদ সেনাবাহিনীর উপ-সেনাপ্রধান। এরশাদের শ্যালক মহিউদ্দিন হলেন যাদু মিয়ার জামাতা। এরশাদ মহিউদ্দিনকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও যাদু মিয়ার ছেলে শফিকুল গনি স্বপনকে প্রতিমন্ত্রী করেন। যাদু মিয়ার মেয়ে মনসুরা মহিউদ্দিন (মহিউদ্দিনের স্ত্রী) সাংসদ নির্বাচিত হন। যাদু মিয়ার মৃত্যুর পর তাঁর মেয়ে রিতা রহমানের বিয়ে হয় মেজর (অব.) খায়রুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি জেলহত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পান। পঁচাত্তরে তিনি ফারুক-রশীদদের সঙ্গে লিবিয়া যান। বিএনপি তাঁকে মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনার করেছিল। আওয়ামী লীগের বিগত আমলে তাঁকে তলব করা হলে তিনি আর দেশে ফেরেননি।

    একটাই দুঃখ তিন কিস্তি শেষ হওয়ার পরও থেকে যাবে। অন্তপুরে খালেদা জিয়া কী ভাবিছেলন? সেকথা জানানোর সাধ্য মিজানুর রহমান খানের নেই বা থাকলেও আমাদের প্রচলিত সংবাদপত্রের প্রতিবেদন সেদিকে মনোনিবেশ করে তৈরি হয় না।

    পড়ুন এখানে বিএনপির জন্ম যেভাবে সেনানিবাসে: ১

    • মাসুদ করিম - ২০ সেপ্টেম্বর ২০১০ (১:১৮ অপরাহ্ণ)

      সাধারণ বুদ্ধির অসাধারণত্ব হল এটি সবার অলক্ষ্যে অসাধ্য সাধন করে।

      সিধু মিয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘জিয়া কিন্তু বাংলা লিখতে-পড়তে জানতেন না। তিনি শেষের দিকে যা কিছুতে সই করতেন, সেটা করতেন শুধু বাংলায় ‘জিয়া’ লিখে। আপনারা যদি তাঁর সই করা ফাইল ইত্যাদি দেখেন, তাহলে এ ব্যাপারটা লক্ষ করবেন। করাচিতে তিনি লেখাপড়া শিখেছেন। যৎসামান্য বাংলা বলতে পারতেন। প্রথম দিকে তিনি বাংলায় যে বক্তব্য দিতেন, সেগুলো প্রথমে বাংলা উচ্চারণে উর্দুতে লিখতেন। লিখে তারপর তা-ই দেখে দেখে ভাষণ দিতেন। যা-ই হোক, ব্যক্তি হিসেবে জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো বদনাম ছিল না। মানুষ তাঁকে পছন্দই করত। কিন্তু ভালো করে বক্তব্য দিতে পারতেন না। দিতে গেলে খালি হাত-পা ছুড়তেন। এসব দেখে-টেখে যাদু একদিন আমাকে বলল, “এ রকম হলে তাঁকে আমি কী করে চালিয়ে নেব?” আমি বললাম, দেখো, জিয়া বক্তৃতা দিতে পারে না ঠিক আছে। কিন্তু তিনি সবচেয়ে ভালোভাবে কী করতে পারেন, সেটা খুঁজে বের করো।’ জবাবে যাদু বলল, হাঁটতে পারে একনাগাড়ে ২০ থেকে ৩০ মাইল পর্যন্ত। আমি বললাম, এই তো পাওয়া গেল সবচেয়ে ভালো একটা উপায়। তুমি তাঁকে সঙ্গে নিয়ে পাড়াগাঁয়ে হাঁটাও। হাঁটাও আর যেটা পারে, তাঁকে দিয়ে সেটাই করাও। গাঁও-গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাবে আর মানুষজনকে জিজ্ঞেস করবে, কেমন আছেন? প্রেসিডেন্ট, দেশের সামরিক বাহিনীর প্রধান, তিনি গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে, কানা-কানচি দিয়ে ঘোরাঘুরি করছেন আর লোকজনের ভালোমন্দের খোঁজখবর করছেন, তাতেই তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠবেন। এভাবে দেখতে দেখতে তিনি বক্তৃতা দেওয়াটাও রপ্ত করে ফেললেন।’

      যদি এই তথ্য সত্য হয়, তবে বলতে হবে এর মধ্য দিয়ে লোকায়ত সাধারণ জ্ঞানের জয়ই হয়েছে।

      জিয়ার ক্ষমতা ঠিক কোথায়? আমার মতে, ইংরেজি লিখতে বাধ্য হচ্ছি – কারণ বাংলায় আমি যা বলব তা খুবই বোধগম্য, তারপরও ইংরেজিটা বললে অনেকে সহজে ধরতে পারবেন আমি কী বলছি, FORCE + INTELLIGENCE, বজ্রমুষ্ঠির সাথে গোয়েন্দাশক্তির সমন্বয়ের মধ্যেই জিয়ার মূলশক্তি নিহিত – এদিয়েই তিনি বাজিমাত করেছেন।

      আজকের কিস্তি বিএনপির জন্ম যেভাবে সেনানিবাসে : ২

    • মাসুদ করিম - ২১ সেপ্টেম্বর ২০১০ (৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ)

      তাহলে যাদুকাহিনীই শেষ কাহিনী, উপরি হিসেবে যাদুকে সহায়তাকারী যাদুভ্রাতা সিধুমিয়া, এর মধ্যে প্রবেশ করলেন ধনেপাতা মওদুদ, পার্টিল্যাডি খালেদা এবং আইজেনব্রাউনের কানকথার সিলমারা কেরানি খোন্দকার দেলওয়ার। মিজানুর রহমান খানের প্রতিবেদনের অনুসন্ধানেই জীবন কেটে যাবে, আর কোনো দিন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লিখতে হবে না। এটা ‘Paid News’ ও হতে পারে কারণ এখানে নিজেদের দলে আস্থার সংকটে ভোগা মওদুদ ও দেলোয়ারকে (অবশ্য বলা হয়নি এটা কোন দেলোয়ার) বিএনপির কাছে উচ্চকিত করা হয়েছে। বিএনপির সৃষ্টিতে মূলশক্তি জিয়া, DGFI, জামায়াতে ইসলামীর কথা এখানে বলা হল না, প্রতিবেদক ঠিক করে নিয়েছেন তিনি শুধু কিছু ‘ক্রীড়নক’-এর কথাই বলবেন, নায়কদের নয়, কারণ তিনি জানেন ক্রীড়নকদের ইতিহাস লিখলে কারো কোনো ঝুঁকি নেই — প্রতিবেদকেরও না, পাঠকেরও না। নায়কের ইতিহাস লেখার অনেক ঝুঁকি, তা সামান্য একটু করে নিয়েছেন প্রতিবেদক এখানে

      আরভিং চেসল ছিলেন আইজেনব্রাউনের অন্যতম বস। মার্কিন দূতাবাসের তখনকার ডেপুটি চিফ অব মিশন। ২৮ অক্টোবর, ১৯৭৬ চেসল ওয়াশিংটনে বার্তা পাঠান: গত জুনে জিয়া একবার আমন্ত্রণ জানান। এবারে আরও অনানুষ্ঠানিকতায় গত রাতে আমি ও আমার স্ত্রী এক চা-চক্রে জিয়ার ক্যান্টনমেন্টের বাড়িতে গেলাম। জোড়া দম্পতির সম্মিলন। আমরা ছাড়া জিয়া ও বেগম জিয়া। ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল থেকে এল আমেরিকান ক্লাব স্যান্ডউইচ। আন্তরিকতার ছোঁয়া ছিল। আলোচনা হলো সাড়ে চার ঘণ্টা।
      চেসল লিখেছেন, ‘সবশেষে বললাম, আমি যদি এখন শহরময় রটে যাওয়া এই শখের প্রশ্নটা না করি, তাহলে আপনি হয়তো বেজার হবেন। প্রশ্নটি হলো, আপনি দেশের রাজনৈতিক অবস্থা কেমন দেখছেন? নির্বাচনের সম্ভাবনা কতটুকু? জিয়া বললেন, আপনাকে গোপনীয়তার সঙ্গে বলছি, সারা দেশ সফর করে বুঝতে পারছি যে, অধিকাংশ জনগণ ও রাজনীতিক এখনই নির্বাচন চায় না। তবে তিনি নিশ্চিত নন যে, নির্বাচন স্থগিত করা হলে তার ফল কী দাঁড়াবে? জিয়া কৌতুকভরে জানতে চাইলেন, আমার কোনো পরামর্শ আছে কি না? আমি কৌতুক না করে বললাম, এ ধরনের উচ্চমাত্রার জটিল বিষয়ে আমি কোনো ধারণামূলক উত্তর দেব না। আমি পত্রিকান্তরে প্রকাশিত ইউপি নির্বাচনের প্রসঙ্গ টানলাম। জিয়া এ বিষয়ে অত্যন্ত উচ্চ আশাবাদ ব্যক্ত করলেন। বললেন, এর মাধ্যমে বিরাট সুফল মিলবে। তবে জিয়া এ কথাও বললেন যে, তিনি নিশ্চিত নন যে ইউপি নির্বাচন দিয়ে জাতীয় নির্বাচন চার থেকে পাঁচ মাসের বেশি (জিয়া সম্পূর্ণ অনুকূল পরিবেশে দুই বছর পরে ’৭৯ সালে নির্বাচন দেন। পঞ্চম সংশোধনী পাস করেন) স্থগিত করা যাবে কি না।
      চেসল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে পাঠানো ওই বার্তায় (নম্বর ১৯৭৬ ঢাকা এ০৫৫৪৫) মন্তব্য করেন, ‘এর আগে ও গত রাতে জিয়ার সঙ্গে আলোচনার মধ্যে একটা বড় ফারাক ঘটে গেছে। তাঁকে আগের চেয়ে অনেক কম সেনা অধিনায়ক মনে হলো। তিনি এখন অনেক বেশি নিরুদ্বেগ, সংকল্পবদ্ধ, আত্মবিশ্বাসী ও পেশাদার রাজনৈতিক নেতা। এই নতুন লোকটি আর ব্যারাকে ফিরে যাচ্ছেন বলে আমি মনে করি না।’

      পড়ুন এখানে শেষ কিস্তি বিএনপির জন্ম যেভাবে সেনানিবাসে : ৩

  5. মাসুদ করিম - ৫ ডিসেম্বর ২০১৩ (১২:৫৪ অপরাহ্ণ)

  6. মাসুদ করিম - ২২ ডিসেম্বর ২০১৩ (৬:৪৩ অপরাহ্ণ)

    The title of this article might upset supporters of BNP, a political party which held power through the democratic process for two full terms. But the continuous chilling remarks made by leaders of BNP and their cohort Jamaat-e-Islami force one to ponder the issue. Early this year, Jamaat threatened to wage civil war while BNP leaders have encouraged replication of atrocities such as that in Fatikchhari against AL across the country. One BNP senior leader, before a party rally in October, directed party leaders and activists to arm themselves with machetes, axes, and whatever weapon they can acquire to fight back if attacked. At a rally in November, a Jamaat leader termed the Sitakunda mayhem as “just a sample” and threatened that “the whole country would turn into Sitakundu.” Another Jamaat leader at the same rally warned of setting ablaze the entire 56,000 square miles of the country. The latest came through another senior BNP leader’s apparent justification of the recent brutality carried out against ordinary people by killing them indiscriminately and burning passengers to death and sabotaging train movement by dismantling fish plates on rail tracks during past weeks of BNP-Jamaat alliance’s hartals and blockades. In response to people’s fear, the senior leader justified these actions by saying: “Does this not happen when there is a war? Don’t you see the Western powers are killing so many innocent civilians in the war in Afghanistan? Don’t you see children getting killed? Don’t you see women getting killed?” Based on this latest stance, one can thus conclude that BNP-Jamaat actually see themselves as waging an undeclared war – which BNP’s political ally Jamaat already threatened at the beginning of the year. Though the killing spree of the innocent ordinary people is happening during the 18-party alliance’s blockades or hartals, BNP-Jamaat blames the government and disclaims their responsibility for these atrocities. But their speeches throughout the year stand contrary to their words. Rather, the BNP acting secretary general in November seemingly acknowledged that opposition leaders and activists were engaged in street violence during their anti-government agitation. In a program of their student wing, the BNP leader said that opposition activists have to do much more than just vandalise one or two vehicles on the street to have the BNP-led alliance’s demands met. In October, a renowned columnist and active sympathiser of BNP-Jamaat alliance and fundamentalist Hefazat-e-Islam, said on a talk show program that journalists “deserved” to be bombed as he thinks the media of today ignored the opposition’s issues: “Such ignorance will eventually lead to bombings. The bombings in recent times have been very little, I think it should have been more.” When the latest BNP statement defending the recent violence by comparing it to collateral damage during war became an issue of debate, BNP supporters justified this statement, giving even more frightening comparisons. A professor of Dhaka University, on a talk show program not only defended the statement, but added examples of the activities of India’s Maoist terror groups and also an Indian separatist group ULFA (United Liberation Front of Assam). Terror acts in Afghanistan and Pakistan were also brought into consideration during the discussion on the program, where the professor tried to justify the opposition’s ongoing violence. We have witnessed political movement and violence in the country during the last four decades. We saw processions, rallies of thousands of people of the both ruling AL and BNP during the 9-year long rule of military dictator HM Ershad and even afterwards when the two major parties were in power one after another. We witnessed party leaders of different levels in the street along with their regular activists and supporters join the program. Even those people who did not belong to any party but supported the cause of the movement also came to the street to extend their solidarity to the movement. We saw brutality of the law enforcers on the protestors during all regimes in the past. We witnessed violent clashes between protestors and police, even protestors throwing crude bombs and cocktails during those clashes. But those were absolutely limited to the political protestors and police or among the rival political groups. Killing ordinary people was never the target of the protestors. Jamaat and their student wing Islami Chhatra Shibir activists have waged a planned war on police since last year. Now many common people are being killed every day. The opposition deny responsibility on the one hand, while on the other hand defend these crimes in a way, as if they are admitting their responsibility for these crimes. What is most alarming is that the BNP and Jamaat are not only conducting these crimes as part of a political and democratic movement, but they and their supporters do not hesitate to cite the example of the war-like situation in Afghanistan, Pakistan, and in some parts of India. Are they really advancing towards taking insurgency groups as their model? Are they imposing war against the people in the name of democratic political movement to meet their demands? If so, isn’t there any reason to ponder the question in the title?

  7. মাসুদ করিম - ৩০ ডিসেম্বর ২০১৩ (১০:২৬ পূর্বাহ্ণ)

    ***

    পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। আজকে মিথ্যাবাদী সরকার… সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে… মা বোনদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে।

    দেশের প্রতি, জনগণের প্রতি দরদ আছে আমাদের, মায়া আছে। সেই জন্য আমরা জনগণকে গুলি করে হত্যা করতে পারি না। কিন্তু আপনারা যেভাবে হত্যা করছেন, তার জবাব আপনাদের দিতে হবে।

    …প্রতিদিন আপনারা আসবেন, বসে থাকবেন গেইটের সামনে। ঠিক আছে। প্রতিদিন আমিও এরকম বের হব। চলুক, কতো দিন চলে।

    কি মনে করেছেন কি? দেশটা কি আপনাদের একলার? পৈত্রিক সম্পত্তি হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের, যে গুণ্ডা বাহিনী দিয়ে আমাদের প্রোগ্রাম বন্ধ করতে চান? পুলিশ বাহিনী দিয়ে প্রোগ্রাম বন্ধ করতে চান?

    যদি সাহস থাকে, কাউন্টার প্রোগ্রাম করে দেখাতেন। সাহস নেই, দশটা লোকও আসে না। ভাড়াটিয়া লোক ভাড়া করে ডিসি এসপিদের দিয়ে লোক আনায়। বুঝি এটা। না হলে এ রকম করুণ পরিণতি হয়? ১৫৪টা সিট আনকনটেস্টেড হয়ে যায়? আর বাকি রয়েছে কি? বাকিগুলোও করে ফেলবে।

    …ওটা কোনো ইলেকশন নয়, এটা যে সিলেকশন হয়েছে, ভাগাভাগির নির্বাচন হয়েছে- এইটা আজকে জাতির কাছে পরিষ্কার। দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার।

    তাই মানুষ আজকে ধিক্কার দিচ্ছে। ধিক্কার দিই আমরা এই সরকারকে। এই সরকারকে ধিক্কার দিই।

    আজকে কি করছেন? আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। আপনারা দায়িত্ব পালন করছেন, কিন্তু আমি মনে করি, দায়িত্বটা সুন্দরভাবে পালন করেন। সম্মানের সঙ্গে যাতে আমরাও কাজ করতে পারি, আপনারাও কাজ করতে পারেন- সেভাবে আপনারা দায়িত্ব পালন করেন। আপনাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।

    পুলিশ বাহিনী, কিন্তু এটাতো ঠিক নয়- যে আমাকে আমার বাড়ি থেকে বের হতে দেবেন না। এটা তো ঠিক নয়। এটা তো ঠিক না।

    আপনাদের যে অফিসার ছিল, সে গেল কোথায়? তার সাথেই তো আমি কথা বলতে চেয়েছি; কেন আমার পথ আটকিয়েছে? কিন্তু সে কোথায়? কেন সে আসছে না এখন সামনে?

    এতোক্ষণ তো অনেক কথা বললেন। আপনি কে? এখন মুখটা বন্ধ কেন? এই যে মহিলা, আপনার মুখটা এখন বন্ধ কেন? বলেন তো কি বলছিলেন এতাক্ষণ ধরে?

    মুখটা বন্ধ কেন এখন? দেশ কোথায়, গোপালী? গোপালগঞ্জ জেলার নামই বদলিয়ে দেব বুঝছেন, গোপালগঞ্জ আর থাকবে না।

    আল্লাহর গজব পড়বে- আপনারা যা শুরু করে দিয়েছেন। কতোগুলা আলেমকে হত্যা করেছেন, এতিমকে হত্যা করেছেন। কতোগুলা বিডিআর অফিসারকে হত্যা করেছেন। সেদিন কোথায় ছিল হাসিনা? সেদিন হাসিনা কোথায় ছিল?

    এতোগুলা অফিসার যে মারল, ৫৭ জন অফিসারকে হত্যা করল, সেদিন হাসিনার এই ফোর্স কোথায় ছিল? কেন সে ফোর্স পাঠায় নাই। আসলে সে নিজেই জড়িত ছিল এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে… সেজন্যই।

    আজকে তো এমন অনেক আননোন চেহারা দেখা যায়, যাদেরকে চেনা যায় না যে তারা আসলেই বাংলাদেশি কি না। বাংলাদেশের আজকের যে কর্মসূচি ছিল, আপনারা যদি আসলেই দেশকে ভালবাসতেন, তাহলে আজকে ছিল আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং.. এবং ডেমোক্রেসি ফর রোড মার্চ। ডেমোক্রেসি ফর মার্চ ছিল আমাদের কর্মসূচি।

    গণতন্ত্রও চাবেন না, দেশ রক্ষা করতেও চাবেন না। গোলামী করবেন? দালালি করবেন? এই গোলামী তো রাখবে না। লেন্দুপ দর্জির (সিকিমের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী) ইতিহাসটা পড়ে দেখেন। সেও কিন্তু টেকে নাই বেশি দিন। তাকেও বিদায় দিয়েছে। দালালি করে… দেশ বিক্রি করে…। কাজেই এই দেশ বিক্রি চলবে না হাসিনার।

    দেশ রক্ষা হবেই ইনশাল্লাহ। দালালি বন্ধ করতে বলেন। আর হাসিনার দালালি করে লাভ হবে না। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে থাকেন। জনগণের সঙ্গে থাকেন। দেশের মানুষের সঙ্গে থাকেন। তবেই কাজে দেবে। দেশ বাঁচবে, মানুষ বাঁচবে।

    আজকে সকলের দায়িত্ব হয়ে গেছে- দেশ বাঁচানো, মানুষ বাঁচানো। আর আপনারা ঘরে ঘরে ঢুকে এখন মানুষ হত্যা করছেন। মনে করে যে এগুলোর হিসাব নেই… এই মা বোনোর কান্না, এই আলেম এতিমের কান্না, এই বিডিআরের অফিসারদের ওয়াইফদের কান্না… এগুলো কি বৃথা যাবে? এগুলো কোনো দিনও বৃথা যাবে না।

    আজকে যারা এই জুলুম নির্যাতন করছেন, তাদেরকেও এদের মতো একদিন চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বা মুছতে মুছতে চোখ অন্ধ হয়ে যাবে।

    এখনো সময় আছে। ধাক্কাধাক্কি বন্ধ করেন। আমরা কেউ ধাক্কাধাক্কি করতে আসিনি। আমরা কোনো ধাক্কাধাক্কি করতে আসিনি। আমি বলছি আপনারা চাকরি করেন, আপনারা করবেন। কিন্তু এ রকম আমাদের গায়ের ওপর উঠে পড়বেন না।

    দূরে থাকেন। দূরে থাকেন। আপনাদের জায়গা যেখানে সেখানে থাকেন। আপনাদের রাস্তাতে থাকার কথা। আপনারা বাড়ির মধ্যে এসে যাচ্ছেন কেন?

    কি, আপনাদের মেয়েরা এতো ঝগড়া করে কেন?

    এই মেয়েরা- চোপ কর। কয়দিনের চাকরি হয়েছে যে এতো কথা বল?

    কিসের জন্য এতো কথা বল? চোপ থাক। বেয়াদব কোথাকার।

    আপনাদের অফিসার কোথায় গেল? আসলো না? তাকে বলবেন, আমার সঙ্গে দেখা করতে, আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাই।

    বুঝেছেন? কি বোঝেননি কথাটা? এটা তো বাংলা ভাষা? নাকি অন্য কোনো ভাষায় বলতে হবে আপনাদেরকে?

    বুঝেছেন? সেই অফিসার কোথায়? তাকে বলেন আমার সঙ্গে দেখা করবে।

    খালেদা জিয়ার বক্তব্যের অডিও

    ***

  8. মাসুদ করিম - ২ জানুয়ারি ২০১৪ (৫:৩৮ অপরাহ্ণ)

  9. মাসুদ করিম - ২ আগস্ট ২০১৪ (১২:২৮ অপরাহ্ণ)

  10. মাসুদ করিম - ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ (৬:৪২ অপরাহ্ণ)

    বিএনপিকে দূর থেকে যতটুকু জানি, তাতে মনে হচ্ছে দলটা এখন ভেঙ্গে গেলেই বেঁচে যায়, না ভাঙ্গলেই বরং বিপদ। তিন ভাগে ভেঙ্গে চলতে পারে তারা বিএনপি(খালেদা-ফালু), বিএনপি(তারেক-জোবাইদা)ও বিএনপি(কোকো বেচারা) : ভারপ্রাপ্ত ফখরুল সহজেই বিএনপি(কোকো বেচারা)র মহাসচিব হয়ে যেতে পারে, ভংচং রিজভী বিএনপি(তারেক-জোবাইদা)র মহাসচিব, সমস্যা হবে বিএনপি(খালেদা-ফালু)র মহাসচিব নিয়ে – মাহমুদুর রহমানকে ভাল মতো বললে, ভুল করছেন, মানে মান্নাকে একটু চেপে ধরলে যোগ দেবেই বিএনপি(খালেদা-ফালু)র মহাসচিব হতে।

    • মাসুদ করিম - ৬ জানুয়ারি ২০১৫ (১০:১৫ পূর্বাহ্ণ)

  11. মাসুদ করিম - ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ (৯:২৩ অপরাহ্ণ)

    • মাসুদ করিম - ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ (১১:১৯ পূর্বাহ্ণ)

      বঙ্গবন্ধুকে এবার ‘রাজাকার’ বললেন তারেক

      যে মানুষটির নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটেছিল, সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এবার রাজাকার বললেন সাবেক সেনাশাসক জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, যিনি এর আগেও বাংলাদেশের ইতিহাসের নিজস্ব ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে বিতর্কিত হয়েছেন।

      বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার লন্ডনে বিএনপির এক আলোচনা সভায় বক্তব্যে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক দাবি করেছেন, একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা আসার ঠিক আগে ইয়াহিয়া খানকে প্রেসিডেন্ট মেনে তার সঙ্গে সমঝোতা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

      ইস্ট লন্ডনের অ্যাট্রিয়াম ব্যাংকোয়েট হলে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক আবারও তার বাবা জিয়াকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক ও প্রথম রাষ্ট্রপতি বলে দাবি করেন।

      শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও কয়েস আহমেদের পরিচালনায় শুরু হওয়া এই সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মো. নাছিরউদ্দিনও ছিলেন।

      বিএনপির ৫০০ শতাধিক নেতা-কর্মী-সমর্থক এই সভায় যোগ দেন, যার ব্যানারে প্রধান অতিথি তারেককে ‘দেশনায়ক’ বলা হয়।

      আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ছিল না দাবি করে এর পক্ষে এ কে খন্দকার এবং বদরুদ্দীন উমরের লেখা উদ্ধৃত করে শোনান তারেক।

      তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান যদি ৭ মার্চ সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসারদের নিয়ে যুদ্ধ শুরু করতেন, তাহলে যে ‘সামান্য সংখ্যক’ পাকিস্তানি সৈন্য তখন ছিল, তাদের সহজেই পরাজিত করা যেত; প্রাণহানি ও অর্থনৈতিক ক্ষতি ‘অনেক কমানো’ যেত।

      “এই সব কিছু জানার পর এর জন্য আমরা এককভাবে কাকে দায়ী করতে পারি? শেখ মুজিবকে। এবং আমরা তাকে যেভাবে রাজাকার বলেছি, আমরা তথ্য প্রমাণ সত্য দিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করে তাকে বলেছি- রাজাকার। আমরা সত্য ঘটনাবলীর ভিত্তিতে বলেছি সে ছিল পাকবন্ধু।”

      এরপর তারেক বলেন, “আজকে যদি আমরা বলি- এই যে লক্ষ লক্ষ মানুষ একাত্তর সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে মারা গেল, এই যে হাজার হাজার মা বোনোর সম্ভ্রম নষ্ট হল, এর জন্য এককভাবে কী শেখ মুজিবকে দায়ী করা যায়? তাহলে এতো মানুষের যে হত্যাকারী তাকে এক বাক্যে কী বলা উচিৎ? যে মানুষ মারে তাকে কি বলা উচিৎ?”

      উপস্থিত বিএনপি কর্মীরা এ সময় চিৎকার করে উত্তর দেন- ‘রাজাকার’।

      বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এর আগেও বিতর্কিত মন্তব্য করা তারেক বলতে থাকেন, “আওয়ামী লীগ দাবি করে তারা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল, মুক্তিযুদ্ধের দল। এই দলকে শেখ মুজিব কি করল- ব্যান করে দিল। আরে তুমি তো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাজাকাররে ভাই।.. মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দলকে তুমি ব্যান করে দিলে, তা তো মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় বিপক্ষের কাজ হল। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের কাজ কে করবে ভাই? একজন রাজাকারই তো করবে। তাহলে শেখ মুজিবকে কি বলা যায়? বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়…।”

      বিএনপিকর্মীরা তারেকের হয়ে উত্তর দেন ‘রাজাকার, খুনি’।

      ১৯৭১ সালের ১৭ থেকে ২৫ মার্চের ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরে তারেক বলেন, তখন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সঙ্গে সমঝোতা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর।

      “১৬ মার্চ ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আসেন, ২৫ মার্চ পর্যন্ত ছিলেন .. শেখ মুজিব এক অফিসারকে বলেছিলেন, ১১ জনের বিষয়ে সমঝোতার কথা, তা হয়েছিল এই সময়েই।”

      “১১ জন মন্ত্রীর ব্যাপারে জাতীয় সরকার গঠনের শেখ মুজিবের সঙ্গে ইয়াহিয়ার মতৈক্য হয়েছিল। এখানেই কিন্তু শেষ নয়, ২৪ মার্চ আবার শেখ মুজিব ও ইয়াহিরার প্রতিনিধিদের আলোচনায় চারটি বিষয়ে মতৈক্য হয়েছিল। … শেখ মুজিব কিন্তু ইয়াহিয়াকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে এক্সসেপ্ট করে নিয়েছিলেন।”

      জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে তিনি এর পক্ষে স্বাধীনতার পর সংবাদপত্রে প্রকাশিত জিয়ার একটি নিবন্ধ তুলে ধরেন তিনি।

      ‘একটি জাতির জন্ম’ শিরোনামের ওই লেখায় জিয়া বলেছিলেন- বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ তার জন্য ছিল ‘গ্রিন সিগন্যাল’।

      মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আওয়ামী লীগ বিকৃত করছে দাবি করে তারেক বলেন, “গত ৪০ বছর ধরে আমরা একটি দলের মিথ্যা মিথ্যা মিথ্যা বারবার শুনে এসেছি।”

      “এই দখলদার রং হেডেড শেখ হাসিনা একটার পর একটা অপকর্ম করেই চলেছে। যখনই বিপদে পড়ে, বিপদে পড়লেই জনগণকে ধোঁকা দিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে।”

      তারেক বলেন, সেজন্য মুক্তিযুদ্ধে শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগের ভূমিকা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা এখন সময়ের দাবি মনে করেন তিনি।

      ২১ অগাস্টসহ বিভিন্ন মামলা মাথায় নিয়ে ছয় বছর ধরে লন্ডনে থাকা তারেক প্রবাসে বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। লন্ডন থেকে মালয়েশিয়া গিয়ে একটি সভায়ও যোগ দেন তিনি।

  12. মাসুদ করিম - ৬ জানুয়ারি ২০১৫ (৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ)

  13. মাসুদ করিম - ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ (৮:৫৯ পূর্বাহ্ণ)

  14. মাসুদ করিম - ২৭ এপ্রিল ২০১৫ (৬:৩৬ অপরাহ্ণ)

    Khaleda calls for ‘silent revenge’ against govt by voting opposition- backed candidates in city polls

    Khaleda Zia yesterday urged voters in Dhaka and Chittagong to take “silent revenge” against all the government “misdeeds” by voting the opposition-backed candidates in tomorrow’s city elections.

    “I call on the city residents [of Dhaka and Chittagong] — please cast your votes for the mayor and councillor candidates we supported. Take silent revenge on the government for its misdeeds. Make a silent revolution,” the BNP chief told a press conference at her Gulshan office in the capital.

    Flanked by leaders of her party and the 20-party alliance, Khaleda also urged all to accept the election results if the polls were held in a free and fair manner but strongly protest it in case of any irregularity and manipulation.

    In about an hour-long speech, the former prime minister mainly focused on the polls in Dhaka south, Dhaka north and Chittagong city corporations and the BNP-led 20-party alliance’s anti-government movement.

    On the recent violence during its street agitation, she said the Awami League men with the help of police carried out the firebomb attacks on people to blame the opposition.

    Top government figures and the ruling AL leaders have been calling on voters to vote against the BNP-backed candidates for such violence that saw about 100 people dead across the country, mostly in arson attacks on public transport.

    ‘SPREADING MONEY’

    “We think people will give their verdict against the ruling party’s falsehood and propaganda in the polls if they get a chance to cast their votes,” Khaleda said.

    She lambasted the Election Commission for its decision to keep the army inside cantonments during the polls and described such deployment “deceptive and meaningless”.

    “Like the country people, I am in doubt if the election will be free and fair.”

    Khaleda alleged that the ruling party-backed candidates were “spreading money” and violating the election code of conduct.

    “The money they [Awami League men] are distributing is your money. Don’t sell your vote, even if you take money from them. Take the money, but go by your conscience while casting your ballot.”

    Claiming to have got overwhelming response from voters during her electioneering in the city, the BNP chairperson said she was confident that people in the three city corporations would make a silent revolution if they got a chance to vote.

    “We’ve taken these polls as a test case for the government, the ruling party, the Election Commission, the administration and law enforcement agencies,” she said, explaining why her opposition alliance was running in the polls.

    If the government rigs this election, it will once again prove that a national election under the Hasina administration is unthinkable, she added.

    Asked whether her party would take part in the general election under the AL government if the city polls are held freely, Khaleda said they stuck to their demand for national elections under a nonparty administration.

    On EC’s allegation that she broke election laws by campaigning with a large motorcade, she said there were only five to six vehicles of her security personnel and another for some party colleagues.

    “The motorcade was long as there were many media vans. It’s regrettable that the Election Commission keeps its eyes shut and says what the government wants it to say.”

    She questioned why the EC played a silent role when she came under attacks by alleged ruling party men during her campaign and when the prime minister, other ministers and AL men violated the election code of conduct.

    ‘NOT A VOTER’

    Khaleda said she would not vote in tomorrow’s polls as she was not a voter of any of the two Dhaka city corporations.

    She is a voter of Dhaka Cantonment area, which is under Cantonment Board, not under the city corporation.

    Replying to a question on the nonstop blockade which is officially still in force, Khaleda said everyone knew the programme had “no effect” now.

    The alliance will decide on lifting the blockade through a discussion later, she added.

    Asked if her party reached an agreement with the government, she answered in the negative.

    ‘SHUN ARROGANCE’

    Taking a swipe at her archrival Sheikh Hasina, Khaleda said, “After assuming power illegally, you are showing extreme arrogance. Shun this haughtiness. Bear in mind that not every day is a Sunday.

    “You’ve committed many misdeeds and orchestrated many evil designs to go to power and also after taking office. Now state power has become dangerous to you, like riding a tiger. You’re afraid of getting down from it.”

    • মাসুদ করিম - ৩০ এপ্রিল ২০১৫ (১০:০২ অপরাহ্ণ)

      ভোট শেষে বিএনপি-র পত্রিকার রিপোর্ট

      Polls bubbles burst
      BNP’s early pullout makes AL win insignificant; irregularities widespread; AL rivals for councillor posts cause violence

      An early boycott by the BNP knocked the air out of the city elections in Dhaka and Chittagong yesterday, pushing numerous voting irregularities into the background and making the results virtually irrelevant.

      Polling agents of BNP-backed candidates were found absent in most centres and the party ultimately handed a walkover to the ruling Awami League contestants just hours into the voting.

      Print and electronic media journalists were shut out from covering the polls process at various centres in Dhaka and Chittagong.

      In many centres, AL’s youth and student fronts took the leading role with help from police in controlling the voting process.

      LAW ENFORCERS OR LAW BREAKERS?

      Widespread irregularities, including vote rigging, were reported by the media. The Daily Star teams of 34 reporters witnessed ballot stuffing by ruling party men in the presence of election officials at 12 centres in Dhaka and five centres in Chittagong.

      In many cases, police, Ansar and election officials barred journalists, including from this paper, from entering voting booths and even polling stations.

      Law enforcers turned a blind eye to all these irregularities and intimidation of BNP-backed candidates, their workers and newsmen by the ruling party men.

      Sporadic violence marred the festivity and dampened voters’ enthusiasm despite heavy presence of law enforcers.

      Most of the incidents of violence involved supporters of AL-backed ward councillor candidates and the party’s rebels vying for the same post. The Daily Star reporters did not see any BNP men resorting to violence.

      Official voter turnout was not available last night, but is expected to be low. In the first few hours of the polling, vote cast looked fairly high but it dipped significantly after BNP’s announcement of boycott, according to our correspondents.

      However, the vote counts released by the Returning Officers show a good flow of voters.

      AN EASY WIN

      The boycott gave the AL-backed candidates a free rein and they looked all set to secure an easy win.

      If they finally pull off victory, it will be the first such success for the AL-backed candidates in city elections since 2010. In all the eight city polls held since 2010, the ruling party’s mayor candidates suffered heavy defeats at the hands of their BNP-backed rivals.

      In last year’s January 5 national election, which too was boycotted by the BNP and many other political parties, voters were denied their voting rights.

      People in the three cities hoped to exercise that right yesterday, but their hopes were dashed again.

      Apart from the BNP, two mayor candidates jointly backed by the Communist Party of Bangladesh and Bangladesher Samajtantrik Dal and another supported by Gono Sanghati Andolon also pulled out of the race in the two city corporations in Dhaka over allegations of irregularities.

      Islami Andolon Bangladesh pulled out its mayor aspirants from all the three city corporations while Bangladesh Islamic Front mayor candidate withdrew from Chittagong polls.

      THE RIGGING

      Voting to the three city corporations began peacefully at 8:00am.

      But showdowns by the ruling party men in and around the polling stations, high-handedness of police officials towards journalists covering the voting and the absence of polling agents of BNP-backed candidates in most polling centres started ringing an alarm bell before midday.

      As the day progressed, reports of vote rigging began pouring in from different centres.

      In some cases, election officials helped the ruling party men stuff ballot boxes and in other cases they played the role of silent spectators, as witnessed by The Daily Star teams.

      THE BOYCOTT

      Throughout the day, BNP’s mayor candidates complained of “widespread vote rigging” and the battle of ballots virtually died down soon after BNP’s announcement of boycott.

      Moudud Ahmed, BNP standing committee member, announced the boycott at an emergency press conference at the party’s Nayapaltan central office around 12:00noon, halfway through the voting.

      “It wasn’t an election. It can’t be termed an election. We’ve rejected and boycotted the voter-less elections. It was a mockery of democracy,” he said.

      He was accompanied by Tabith Awal, the party’s mayor candidate for Dhaka north, and Afroza Abbas, wife of Mirza Abbas who was backed by the party for Dhaka south.

      Boycotting the election, the candidates brought various allegations against the government and the EC.

      BNP-backed candidate for Chittagong City Corporation M Manjur Alam announced his boycott around 11:00am. He also announced his retirement from politics, saying the current political situation was not favourable for him.

      Dhaka North City Corporation mayoral aspirant Zonayed Saki said he had “no confidence” in the voting process and that the polls result would not reflect people’s verdict.

      At a press conference in the capital, he came up with information of grabbing of 40 polling centres, fake votes, threats to the polling agents and intimidation.

      Over a dozen councillor aspirants filed allegations with the EC that ruling party men forced their agents out of the centres.

      Last night, Tabith Awal wrote to the EC demanding a fresh election.

      THE DENIAL

      AL Joint General Secretary Mahbubul Alam Hanif outright dismissed the allegations of irregularities.

      He said BNP’s boycott was pre-planned.

      “Having sensed a sure defeat, the BNP pulled out of the race. They staged this drama to create an issue for a fresh movement,” Hanif told a press conference at the AL chief’s Dhanmondi office.

      In the evening, Chief Election Commissioner Kazi Rakibuddin Ahmed told journalists that he visited several polling centres and saw no irregularities anywhere.

      He said he was happy with the polls and thanked all for helping him hold a “free and fair election”.

      VOTERS’ VOICE

      Outside the Maniknagar Government Primary School centre in the capital, Rina Begum was waiting restlessly for more than 30 minutes to cast her vote.

      Having run out of patience, she finally sought help from journalists.

      “Please tell the policemen to open the gate … I came here to vote after a long time leaving my work,” said Rina, a domestic help.

      She, however, could not cast her vote as voting stopped at the centre around 12:00noon after incidents of ballot stuffing by a group of youths.

      A resident of Paltan area, Md Iqbal came to cast his vote at a polling station in Paltan Community Centre around 12:30pm. At the gate, police told him to come later.

      “You all come after lunch,” he quoted a policeman as telling him and others.

      Disappointed, he left the centre and did not go back.

  15. মাসুদ করিম - ৯ জুন ২০১৫ (৯:১২ পূর্বাহ্ণ)

    ভারত মৌলবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, খালেদাকে মোদী

    ভারত যে কোনো ধরনের মৌলবাদ ও উগ্রপন্থার বিরোধী বলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

    রোববার বিকালে ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া।

    ওই বৈঠকের আলোচনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে এবং মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরোধী-ভারতের এ অবস্থান স্পষ্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী।”

    বিএনপি চেয়ারপারসনও ‘যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে’ অবস্থান জানিয়েছেন।

    জয়শঙ্করের ওই প্রেস ব্রিফিংয়ের ট্রান্সক্রিপ্ট পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

    গত বছর দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে আসা বিএনপি নেতৃত্ব মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্রের ঘাটতির’ প্রসঙ্গ এনেছেন বলে এর আগে দলটির নেতারা জানান।

    জয়শঙ্কর বলেছেন, নরেন্দ্র মোদী-খালেদা জিয়ার বৈঠকে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

    “স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুসমর্থনে নেতৃত্ব দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছেন বিএনপি নেত্রী।

    “এ অঞ্চলে অবাধ পণ্য পরিবহনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন তিনি।”

    দুই দিনের সফরে শনিবার সকালে ঢাকা আসেন নরেন্দ্র মোদী।

    বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দুই দেশের শীর্ষ বৈঠক হয়। এতে অবকাঠামো, তথ্য-প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার ১৯টি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও সম্মতিপত্র সই হয়।

    দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ছিটমহল বিনিময়ে স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুসমর্থনের দলিল বিনিময় করে ভারত ও বাংলাদেশ, যাতে দশকের পর দশক অবরুদ্ধ জীবন কাটানো অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের মুক্তির পথ খোলে।

    পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা এবং ঢাকা-শিলং-গুয়াহাটি রুটে নতুন বাস সার্ভিস চালু করেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী।

    নরেন্দ্র মোদীর সফর উপলক্ষে ঢাকা-নয়া দিল্লির যৌথ ঘোষণায় যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করে নিরাপত্তা সহযোগিতায় একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করা হয়েছে।

    রোববার রাতে নয়া দিল্লি ফিরে গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

  16. মাসুদ করিম - ১৩ জুলাই ২০১৫ (১২:০৮ অপরাহ্ণ)

  17. মাসুদ করিম - ২১ জুলাই ২০১৫ (১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ)

    দল গুছিয়ে আবার আন্দোলন: খালেদা

    বছরের শুরুতে তিন মাসের সহিংস অবরোধ-হরতালের পর দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফের সরকারবিরোধী আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

    তবে তিনি বলেছেন, এবারের আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ। দল গুছিয়েই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ওই আন্দোলনে নামবেন তিনি।

    নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত লাগাতার অবরোধ-হরতাল ডেকেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারকে নতি স্বীকারে বাধ্য করতে না পারার মধ্যে আন্দোলনে ছেদ টেনেছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

    ওই আন্দোলনের মধ্যে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু ঘটে মালয়েশিয়ায়। এক ছেলেকে হারানোর পর অন্য ছেলে তারেক রহমানকে প্রবাসে রেখে শনিবার ঈদুল ফিতর কাটে তার।

    ঈদের দিন দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কূটনীতিক ও গণমান্য নাগরিকসহ সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এরপর চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

    আওয়ামী লীগের ‘অপশাসনে’ জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে বলে আসা খালেদা জিয়ার কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল- বিএনপি রাজপথে সক্রিয় নয় কেন?

    জবাবে তিনি বলেন, “বিএনপির নামে শুধু মামলা আর মামলা। আমাদের অনেক নেতা-কর্মী জেল আছে। কত ছেলে যে গুম হয়েছে, তার হিসাব নেই। কাজেই বিএনপিকে এখন পুনর্গঠিত হতে হবে। এরপর আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলন করব।”

    ‘জ্বালাও-পোড়াও’ এর বিরুদ্ধে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, “আমরা সেই আন্দোলন করব, যে আন্দোলন দেশের জন্য হবে, মানুষের কল্যাণ হবে।

    “আমরা জ্বালাও-পোড়াও-ভাংচুরের আন্দোলনে বিশ্বাস করি না। সেই আন্দোলন আমরা করিনি। কারা জ্বালাও-পোড়াও করেছে, তা দেশবাসী জানে।”

    তিন মাসের হরতাল-অবরোধে বহু বাস পুড়িয়ে এবং পেট্রোল বোমা ছুড়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর জন্য বিএনপিকে দায়ী করে আসছে সরকার। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, এর পেছনে সরকারের ষড়যন্ত্র রয়েছে। অন্যদিকে সহিংসতার দায় কর্মসূচি আহ্বানকারী পক্ষ এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য রয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের।

    বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চলছে দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, “বাংলাদেশে এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হচ্ছে বিএনপি। সেজন্য একে শেষ করতে তারা (সরকার) উঠে পড়ে লেগেছে।

    “খবরের কাগজে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা রকমভাবে এজেন্সি ও গ্রুপের মাধ্যমে লেখানো হয়। বিএনপির বিরুদ্ধে বিভেদ, বিএনপিতে ‘ঐক্য নেই’, ‘এই হচ্ছে-সেই হচ্ছে’, ‘অমুক গ্রুপ-তমুক গ্রুপ’। আমি স্পষ্টভাষায় বলতে চাই- এগুলো কিছুই নয়। বিএনপি জনগণের সঙ্গে আছে, থাকবে।”

    রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও তার জন্য দেশকে বিভক্ত করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।

    “বাংলাদেশ একটা সম্ভাবনাময় দেশ। এই দেশকে সকলে মিলে গড়ে তুলতে হলে আমাদের সব বিভেদ ভুলে যেতে হবে। রাজনীতিতে দল থাকবে, তাই বলে যে একজনের সঙ্গে আরেকজনের কোনো সম্পর্ক থাকবে না, কেউ কারও চেহারা দেখব না। এটা কোনো রাজনীতি হতে পারে না।”

    “আমাদের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক খাকবে। পারিবারিক সম্পর্কও থাকতে পারে। কিন্তু রাজনীতি যে যার মতো করবে। হানাহানি-খুনাখুনি-মারামারি এগুলো রাজনীতি নয়,” বলেন তিনি।

  18. মাসুদ করিম - ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ (১:৪৯ অপরাহ্ণ)

    প্রশংসা করে ঘেঁটে দেয়ার অবআর্মি প্রক্রিয়ার উদাহরণ, এর বেশি কিছু নয়।

    মিত্রবাহিনীকে ফেরাতে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ঐতিহাসিক: হান্নান শাহ

    একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের পর মিত্রবাহিনীকে নিজের দেশে ফেরাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘ঐতিহাসিক’ ভূমিকা রেখেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আসম হান্নান শাহ।

    রোববার দুপুরে বিজয় দিবসের এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

    হান্নান শাহ বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের শেষে যখন দেশবন্ধু বাংলাদেশে ফিরে আসলেন, উনি এই জাতির জন্য সবচেয়ে বড় উপকার যেটি করে গেলেন, সেটি যুদ্ধের পরপরই। সেটা হল উনি উনার ব্যক্তিত্ব দিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর (ইন্দিরা গান্ধী) কাছ থেকে আশ্বাস বা প্রতিশ্রুতি নিয়ে নিলেন কত দ্রুত ভারতীয় বাহিনী এখান থেকে চলে যাবেন।”

    অখণ্ড বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা চিত্তরঞ্জন দাশকে ‘দেশবন্ধু’ বলা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু হিসেবেই খ্যাত।

    ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশে থেকে গেলে দেশের অবস্থা কাশ্মিরের মতো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে সাবেক সেনা কর্মকর্তা হান্নান শাহ বলেন, “আপনারা কল্পনা করতে পারবেন না, যদি ভারতীয় বাহিনী এখানে থাকত এটা আবার কাশ্মিরের মতো একটা রাজ্য হয়ে যেত কিনা।”

    তিনি বলেন, “জাতি তো এমনিতে কৃতজ্ঞ বঙ্গবন্ধুর কাছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সেদিন যদি উনি এটা না করতেন তাহলে কী অবস্থা হত। ভয়াবহ অবস্থা হয়ে যেত। আরও যে কত বছর সংগ্রাম চলত, আরও কত লক্ষ মানুষ শেষ হয়ে যেত।”

    জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে ‘বিজয় দিবসের অঙ্গীকার ও চলমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

    বঙ্গবন্ধুর ভূমিকার প্রশংসা করেই আবার বক্তৃতায় জিয়াউর রহমানকে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ দাবি করে হান্নান শাহ বলেন, “ওই ঘোষণা আমরা সবাই শুনেছি, শেখ হাসিনা না কি শোনেননি।”

    বক্তৃতায় পরে শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ সম্বোধন করে হান্নান শাহ বলেন, “যিনি গণতন্ত্রের মানসপুত্র, সেই বঙ্গবন্ধুকে দেখলাম যিনি আইয়ুব খান, মোনায়েম খান, ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন; যুদ্ধ ক্ষেত্রে নয়, বুদ্ধি দিয়ে রাজনীতি দিয়ে তিনি যুদ্ধ করেছেন।

    “উনি অসহায়ের মতো কাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েম করলেন যেখানে গণতন্ত্রের ‘গ’ থাকবে না। এটা আমরা বঙ্গবন্ধুর থেকে আশা করিনি।”

    বাকশাল কায়েমের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য ‘কবর রচনা’ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।

    দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে হান্নান শাহ বলেন, “আজকে কী অবস্থা! এখন রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে পরিস্থিতিটা আরও খারাপ। ন্যায় বিচারের জন্য আমাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।”

    মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর সহযোগিতার কথা ‍উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি চেয়েছিলাম একটি সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। যারা লেখাপড়া করেন, দেখবেন, আমরা কোথাও কিন্তু আমরা স্বাধীনতা চাইনি। আমরা অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলাম। আমাদের ওপর পাকিস্তানিরা চাপিয়ে দিয়েছিল বলেই তা প্রতিরোধ করতে গিয়ে আমরা মিত্র দেশের সহযোগিতা পেয়েছি। সেই সহায়তা নিয়ে আমরা যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছি।”

    তিনি বলেন, “একজন সাবেক সামরিক অফিসার হিসেবে বলছি, সেই সময়ে মিত্র বাহিনী না থাকলে কেবল মুক্তিযোদ্ধাদের এই দেশ স্বাধীন করতে ৫ থেকে আরও ৭ বছর লাগত। তারপর কী ভবিষ্যত হত, তা জানা যায় না।”

    মিত্রবাহিনীর বিষয়ে এই সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেন, “ভারত কিন্তু কেবল আমাদেরকে সহায়তা করার জন্য সহযোগিতা করেননি। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানকে ভাঙতে হবে, তাদের পরাজিত করতে হবে। তাহলে পাকিস্তান দুর্বল হবে। তারা ভারতের জন্য একটা থ্রেট, তারা আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়াবে না।”

    একই সঙ্গে ১৯৭৫ সালের আগে জাসদ ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে আনার জন্য ভারতীয় দূতাবাসকে আক্রমণ করেছিল বলেও অভিযোগ করেন আ স ম হান্নান।

    আসন্ন পৌর নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে প্রশ্নাতীত মন্তব্য করে তিনি বলেন, “দুইজন মন্ত্রী গিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর ছবি পত্রিকায় আসলো। এরপরও নির্বাচন কমিশন বলে তাদের কাছে নাকি কোনো তথ্য প্রমাণ নাই। থাকবে কী করে, তারা তো কাজ করেন কর্তার ইচ্ছা কর্মের উপরে।”

    “নির্বাচন কমিশন দাবি করেন, তারা নিরপেক্ষ। আমরা সবাই জানি, এই পর্যন্ত যত কর্মকাণ্ড হয়েছে, তারা একটি আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান।”

    সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পারভেজ আহমেদ, জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি আবুল হাশেম রানা, জিয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি মিয়া মুহাম্মদ আনোয়ার বক্তব্য রাখেন।

  19. মাসুদ করিম - ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ (১:৫৭ অপরাহ্ণ)

    একটা ঘরে স্বামীস্ত্রীদুইপুত্র ‘মুক্তিযুদ্ধ’ করল, তাদের ৪জনের কেউই যখন মারা যায়নি, তাহলে এই ‘জিয়াপরিবার’ স্যাম্পলের ভিত্তিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নিহতের সংখ্যা ০।

    মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে খালেদার সংশয়

    একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে সংশয় আছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার।

    সংশয়ের কথা প্রকাশ করে সোমবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন, “আজকে বলা হয়, এতো লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে।”

    এর আগে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর বিভিন্ন লেখায় মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বাংলাদেশে অবস্থানরত ব্রিটিশ নাগরিক ডেভিড বার্গম্যান, যিনি ব্লগ লিখে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে প্রচার চালান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অবমাননার দায়ে শাস্তি পেয়েছিলেন তিনি।

    বাংলাদেশে ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ নারী ধর্ষিত হওয়ার তথ্যের ‘কোনো ভিত্তি নেই’ বলে বার্গম্যান তার লেখায় দাবি করেছিলেন।

    বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রসঙ্গে কথা তোলেন খালেদা জিয়া: “সরকার নানারকম মুক্তিযোদ্ধা তালিকা তৈরি করছে। যাদের অন্যায়ভাবে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে; আমরা ক্ষমতায় আসলে সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করে তাদের যথাযথ সন্মান ও সন্মাননা দেব।”

    একাত্তরে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা নয়, ক্ষমতা চেয়েছিল দাবি করে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার জেনারেল জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বলেন, “তিনি (জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ চাননি।”

    এর আগে খালেদা ও জিয়াউর রহমানের বড় ছেলে তারেক রহমান এই দাবি তুলে সমালোচিত হয়েছিলেন।
    একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করে সমালোচিত বিএনপির প্রধান বলেছেন, তাদের দলে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা আছেন।

    বহু আলোচিত যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে নিজের আগের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে খালেদা বলেন, “যারা প্রকৃত রাজাকার, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সত্যিকারভাবে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করেছে, অত্যাচার করেছে, হত্যা করেছে, তাদের শাস্তি হতে হবে, বিচার হতে হবে।

    “সেই বিচার আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও স্বচ্ছ হতে হবে।”

    আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধা নাম দিয়ে যুদ্ধাপরাধী পালছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

    তার দাবি, “যারা যুদ্ধ করেনি, যারা নানাভাবে অপরাধের সঙ্গে সাহায্য করছে, তারা এখন আওয়ামী লীগের প্রিয় ও কাছের লোক। এরকম বহু আছে।

    “আওয়ামী লীগের নিজের ঘরে মুক্তিযোদ্ধা নাম দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের পালছে, মন্ত্রী বানায়, ওমুক বানায়। অনেক রাজাকার আছে তাদের দলে। তাদের কিন্তু তারা চোখে দেখছে না। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেই। সরিষাবাড়ীর মাওলানা নুরুল ইসলাম- সে কি মুক্তিযোদ্ধা? এই রাজকারকে পতাকা কে দিয়েছিল, হাসিনা দেয়নি? তাহলে কেন আমাদের কথা বলে?”

    মাওলানা নুরুল ইসলাম দলের সঙ্গে জড়িত না থাকলেও সারের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জামালপুরের সরিষবাড়ী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান। ওই নির্বাচনে জয়ের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। নুরুল ইসলামের একাত্তরের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

    মুক্তিযুদ্ধের উপঅধিনায়ক এয়ার ভাইস মার্শাল একে খন্দকার মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নিয়ে বই লেখার পর সরকার নানা মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করছে বলে দাবি করেন খালেদা জিয়া।

    ১৯৭৫ সালের আগে সিরাজ শিকদারকে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু করে বলে মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া।
    তিনি বলেন, “১৯৭১-৭৫ সাল পর্যন্ত দেশের কী অবস্থা করেছে, তা নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। সরকারের কারণে এ নিয়ে বই-পুস্তক পাওয়া যায় না। কাজেই মুক্তিযোদ্ধাদের ওই সময়ের বিষয়গুলো নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে।”

    রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা দলের ফজলুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল জয়নুল আবেদীন, এসএম শফিউজ্জামান খোকন, হাজী আবুল হোসেন, সাদেক আহমদে খান, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুব দলের সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মহিলা দলের শিরিন সুলতানা, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের শামা ওবায়েদ বক্তব্য রাখেন।

    মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কামালউদ্দিন, নুরুল ইসলাম, আবদুস সামাদ মোল্লা, হাজী মিজানুর রহমান ভুঁইয়া, আবদুল মান্নান খান, চৌধুরী আবু তালেব, আবদুল মান্নান, গাউস মিয়া, এস এ জলিল, আবদুর রাজ্জাক রাজা, আমানউল্লাহ আমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

    • মাসুদ করিম - ২৫ ডিসেম্বর ২০১৫ (১১:৪১ অপরাহ্ণ)

      শহীদের সংখ্যা: জরিপ করতে বলল বিএনপি

      মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে ‘জরিপ’ করে ‘সঠিক সংখ্যা’ নিরূপণ করতে বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

      আর দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শহীদের সংখ্যা নিয়ে তথ্যে ‘ঘাটতি থাকায়’ আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরা খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করছেন।

      খালেদার বক্তব্য নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ায় মধ্যেই শুক্রবার ঢাকায় এক আলোচনা সভায় বিএনপির দুই নেতার এই বক্তব্য আসে।

      গয়েশ্বর বলেন, “আমি সাংবাদিক ভাইদের বলব, কেউ কথা বললে তার বক্তব্যের লাইনটা দিয়ে মতামত জরিপ করেন… যাদের গ্রামে যতজন একাত্তর সালে মারা গেছেন, শুধু পাকিস্তানিদের গুলিতে নয়, সাধারণ মৃত্যুও তো আছে- এগুলোর ঠিকানা পাঠাতে, মেসেজ করে দিতে বলেন। দেখেন তারপর পরিসংখ্যানটা চলে আসবে।”

      গত ২১ ডিসেম্বর এক আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা বলেন, “আজকে বলা হয়, এতো লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে।”

      তার ওই বক্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। বক্তব্য প্রত্যাহার করে খালেদাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এক আইনজীবী উকিল নোটিস পাঠিয়ে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে বলেন এবং নড়াইলে খালেদার নামে একটি মামলাও করা হয়।

      বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভায় বক্তব্যে বুদ্ধিজীবী দিবস পালনেরও সমালোচনা করেছেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর। তার মতে, একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর যারা নিহত হয়েছেন তারা ‘নির্বোধের’ মতো মারা গেছেন।

      মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমর্থনে গয়েশ্বর বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, বির্তক আছে। উনি কমও বলেননি, বেশিও বলেননি। বলেছেন সংখ্যা নিয়ে বির্তক আছে। এই বিতর্কের কথাটা কিন্তু পার্লামেন্টে উঠেছিল ১৯৯১ সালে। পালার্মেন্ট সদস্য প্রয়াত কর্নেল আকবর হোসেন প্রশ্নটা উত্থাপন করেছিলেন।”
      নব্বই দশকের প্রথমার্ধে খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রিসভায় ছিলেন আকবর হোসেন। পরে ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারেরও মন্ত্রী ছিলেন তিনি।

      ‘মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা কোনো বাণী নয় যে তা পরিবর্তন করা যাবে না’ মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, “শেখ সাহেব (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) যেটা বলেছেন লন্ডনের হিথরো এয়ারপোর্টে, সেটাতো ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম/এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলে যে বাজারমাত করেন, সেরকম বাজারমাতের বিষয় এটা না।

      “অজ্ঞতাবশত তিন লাখের জায়গায় তিন মিলিয়ন/৩০ লাখ হয়ে গেছে। এটা তাড়াহুড়া করতে গিয়ে পেছনে কানে কানে বলছেন আর উনি শুনছেন তাড়াহুড়ায় একটা কথা উনি বলছেন। আমরা এটাকে টার্ম হিসেবে নিয়েছি ৩০ লক্ষ।”

      যাচাই-বাছাই ছাড়া মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ৩০ লাখ বলার সমালোচনা করেন গয়েশ্বর, যদিও খালেদা নেতৃত্বাধীন সরকার আমলেও প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি-বাণীতে এই সংখ্যা উল্লেখ করা হত।

      “মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা তার মানে সেই গানের কলির মতো- সেই সত্য হবে রামের জন্মভূমি, অযোধ্যার চেয়ে সত্য, কবি তোমার রচনার জন্য। তাই আমরা সেই হিসেবে ৩০ লক্ষ ৩০ লক্ষ বলি, কোনো দিন গইনা দেখলাম না,” বলেন তিনি।

      মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা বের করতে পদক্ষেপ নিতে সরকারকে পরামর্শ না দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগপন্থি ‘বুদ্ধিজীবীদের’ সমালোচনা করেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর।

      তিনি বলেন, “এখন আধুনিক প্রযুক্তি আছে। আমরা ইচ্ছা করলে সাত দিনের মধ্যে পরিসংখ্যানটা বের করতে পারি। সে কারণে আওয়ামী লীগের বুদ্ধিজীবীরা আহম্মক কি না জানি না। তাদের বলব- প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এর একটা জরিপ করে ফেলেন। প্রকৃত ইতিহাসটা চলে আসুক।”

      একাত্তরের নিহতের সংখ্যা বহু বাড়িয়ে বলা হয় বলে মনে করেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

      তিনি বলেন, “আমরা জানি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে তিন লাখ ৭৬ হাজার পরিবারের তালিকা আছে। বাকি ২৭ লাখ কোথায়? ২৭ লাখ তো সহজ ব্যাপার না।

      “সুতরাং গলার জোরে কথা না বলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে জরিপ করে সংখ্যা যদি ৩০ লাখের জায়গায় ৬০ লাখ হয় হলো- অসুবিধা কী? আর ৩০ লাখ না হয়ে যদি তিন লাখ হয়, তাতেই আমার সমস্যাটা কী? দেশটা তো স্বাধীন হয়েছে। ১০ টাকার বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হোক আর ৩০ লাখের বিনিময়ই হোক দেশ তো স্বাধীন হয়েছে। এটা তো বিতর্কের বিষয়বস্তু না কোনো মতেই।”

      ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর নিহত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, লেখক, চিকিৎসক, শিল্পী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার খ্যাতিমানদের স্মরণে ওই দিনটিকে বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালনের সমালোচনা করেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

      নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, “উনারা যদি এতো বুদ্ধিমান হন, তাহলে ১৪ তারিখ পর্যন্ত নিজের ঘরে থাকে কী করে, একটু বলেন তো। আর পাকিস্তান সরকারের তারা বেতন খাইল। এটা তো বুঝা যায়।

      “হ্যাঁ, নেতৃত্বের অজ্ঞতার কারণে ২৫ মার্চ যারা মারা গেছেন, আত্মহুতি দিয়েছেন, তারা না জানার কারণে। কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর যারা মারা গেছেন, তারা অজ্ঞতার কারণে মারা যাননি। তারা জ্ঞাত সারে বাড়িতে ছিলেন, তারা প্রতিদিন তো যে যেখানে কর্মস্থল ছিল, সেখানে কর্মস্থলে যাইতেন।”
      বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল দেওয়া নির্বোধের কাজ বলে মনে করেন তিনি।

      “তারা নির্বোধের মতো মারা গেল, আমাদের মতো নির্বোধেরা প্রতিদিন শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে ফুল দেয়। না গেলে আবার পাপ হয়,” বলেন তিনি।

      রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ন্যাশনালিস্ট এক্স স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ‘স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রুহুল কবির রিজভী’ শিরোনামে ওই আলোচনা সভা হয়।

      একাত্তরে নিহতের সংখ্যা নিয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে রিজভী বলেন, “বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, তার সংখ্যাটি কোনো অফিসিয়াল বক্তব্য ছিল না। কোনো এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলে বসেছেন।”

      একাত্তরে নিহতের সংখ্যা নিয়ে ‘বিতর্ক’ আছে বললেও সেদিন তা স্পষ্ট করেননি খালেদা জিয়া। এদিন তার না বলা কথা তুলে ধরেন রিজভী।

      “এটা নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে যারা শ্রদ্ধা করেন, এমআর আক্তার মুকুল তার ‘আমি বিজয় দেখেছি’ বইতে বলেছেন, দুই লাখের মতো। আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন ’৭০ সালে মোহাইমেন বলেছেন, প্রায় এক লক্ষ ৩০ বা ৪০ হাজার। এই বির্তক আছে।”

      এই বিষয়গুলো ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে কথা বলা ‘গণতান্ত্রিক অধিকার’ দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “বেগম জিয়া বলেছেন, এই সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। উনি বলেননি এটা কম। এটা তো ৩০ লক্ষ হতে পারে, ৫০ লক্ষও হতে পারে।

      “কিন্তু তারা সংসদ দখল করে নিয়েছে, গণতন্ত্র দখল করে নিয়ে খবরের কাগজ দখল করে নিয়েছে, তারা মিডিয়া দখল করে নিয়েছে। আর তো কিছু বলার নেই। এখন বেগম জিয়ার বক্তব্য নিয়ে কিছু করা যায় কি না এটাই হচ্ছে তাদের লাস্ট ব্যবসা।”

      সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাহারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সাবেক সাংসদ সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া, অধ্যাপক রেজাউল হক, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম, রমেশ চন্দ্র দত্ত, মোজাম্মেল কবির, অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান খান, মতিয়ার রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

      বুদ্ধিজীবীরা ‘নির্বোধের’ মতো মরেছে: গয়েশ্বর

      বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশের পর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে কটূক্তি করলেন দলটির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

      একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর নিহত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, লেখক, চিকিৎসক, শিল্পী ও সাংবাদিকরা ‘নির্বোধের’ মতো মারা যান বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

      শুক্রবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর বলেন, “তারা নির্বোধের মতো মারা গেল, আমাদের মতো নির্বোধেরা প্রতিদিন শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে ফুল দেয়। না গেলে আবার পাপ হয়।

      “উনারা যদি এতো বুদ্ধিমান হন, তাহলে ১৪ তারিখ পর্যন্ত তারা নিজের ঘরে থাকে কী করে, একটু বলেন তো।”

      ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে।

      বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী ওই নিধনযজ্ঞ চালায়; তাদের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশ যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে- তা নিশ্চিত করা।

      ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের দুদিন আগে বুদ্ধিজীবী হত্যায় প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সদস্যরা।

      সেই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত যে চার যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ সাজার রায় হয়েছে, তাদের মধ্যে একাত্তরের বদর কমান্ডার জামায়াত নেতা আলী আহসান মো. মুজহিদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে গত ২২ নভেম্বর।

      বক্তব্যে এ প্রসঙ্গও তোলেন জামায়াতে ইসলামীর জোটসঙ্গী বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা গয়েশ্বর।
      “যুদ্ধাপরাধীর বিচারটা করছেন ভালো। এরা (বুদ্ধিজীবী) যে শেষ দিন পর্যন্ত পাকিস্তান সরকারের বেতন-ভাতা খাইছে নির্বোধের মতো।”

      গয়েশ্বর বলেন, “হ্যাঁ, নেতৃত্বের অজ্ঞতার কারণে ২৫ মার্চ যারা মারা গেছেন, আত্মাহুতি দিয়েছেন, তারা না জানার কারণে। কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর যারা মারা গেছেন, তারা অজ্ঞতার কারণে মারা যাননি। তারা জ্ঞাত সারে বাড়িতে ছিলেন। তারা প্রতিদিন তো যে যেখানে কর্মস্থল ছিল, সেখানে কর্মস্থলে যাইতেন।”

      মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্তদের নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন গয়েশ্বর।

      তিনি বলেন, “আজকের যে স্পিকার (শিরিন শারমিন চৌধুরী) আছেন তার বাবা রফিকুল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন না কি? উনি পাকিস্তান সরকারের চাকুরি করেননি? শফিউল আজম, মখা আলমগীর (মহিউদ্দিন খান আলমগীর), আশিকুর রহমান পাকিস্তান সরকারের চাকুরি করেননি?

      “যারা পাকিস্তানের চাকুরি করলেন, বেতন-ভাতা খাইলেন, তারা হয়ে গেলেন মুক্তিযোদ্ধা, আর যারা পালায়ে পালায়ে না খেয়ে বেড়ালো তারা হয়ে গেলেন রাজাকার। তা-ই না? এ বিষয়গুলো আমাদের আজ পরিষ্কার করা দরকার।”

  20. মাসুদ করিম - ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ (৭:৫৩ অপরাহ্ণ)

    টুইটারে এলেন খালেদা জিয়া

    টুইটারে একাউন্ট খোলার মধ‌্যদিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যমে এসেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

    বৃহস্পতিবার দলের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তার এই একাউন্টটি (BegumZiaBd) খোলা হয়।

    প্রথম টুইটে খালেদা জিয়া দেশবাসীর উদ্দেশে বাংলা ও ইংরেজিতে লিখেছেন- ‘প্রতিষ্ঠা দিবসের আহ্বান- আসুন আমরা স্বৈরশাসনকে পরাজিত করি, ঐক্যবদ্ধ হই, মুক্ত গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ি’।

    বিশ্বের নানা দেশের রাষ্ট্রনেতাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যমে সক্রিয় তৎপরতা থাকলেও বাংলাদেশে সেই প্রবণতাটি নেই।

    রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানে জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির নামে একটি আলাদা ওয়েবসাইট (www.bnpbangladesh.com), ফেইসবুক (bnp.communication), টুইটার (bnpbangladesh) ও ব্লগও (www.banaladeshivoices.blogspot.com) উদ্বোধন করেন খালেদা জিয়া।

    বিএনপির নতুন ওয়েবসাইটে দলের সংবাদসহ সাংগঠনিক সব কার্যক্রমের খবর বিভিন্ন আলোকচিত্র সন্নিবেশিত।

    প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা অনুষ্ঠানের মধ‌্যে এই সাইটগুলো উদ্বোধন হয়।

    বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

    এর আগে সকালে শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান খালেদা।

  21. মাসুদ করিম - ২৭ এপ্রিল ২০১৭ (২:২৯ অপরাহ্ণ)

    বিএনপি বিজ্ঞানকেও ‘নষ্ট’ করছে: বিজ্ঞানমন্ত্রী

    বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার পরও হাওরে ইউরেনিয়াম দূষণের দাবি করে যাওয়ায় বিএনপির সমালোচনা করেছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।

    বিএনপির ভূমিকায় ‍দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বুধবার এক অনুষ্ঠানে কবিতার ছন্দে বলেছেন, “বিজ্ঞানে আজকাল ঢুকে গেছে রাজনীতি/ দুষ্টুরা বলে ভালো/ এটা নাকি তেজারতি।”

    দেশের হাওরাঞ্চলে সম্প্রতি অকাল বন্যার পানি দূষণে হাঁস-মাছ মারা যাওয়ার পর বিএনপি দাবি তোলে, ইউরেনিয়াম দূষণই এই প্রাণিদের মৃত্যুর কারণ।

    এরপর পরমাণু শক্তি কমিশনের গবেষক দল হাওরের পানি পরীক্ষা করে তেজষ্ক্রিয়তার দাবি নাকচের পর তাতে অনাস্থা জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভারত থেকে আসা ইউরেনিয়ামেই প্রাণিগুলো মারা গেছে।

    বুধবার জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের সুবর্ণজয়ন্তি অনুষ্ঠানে এই প্রসঙ্গ তুলে ইয়াফেজ ওসমান বলেন, “বাঙালির কাছে অসাধ্য বলে কিছু নেই, বাঙালি সব পারে।

    “ইউরেনিয়ামের আশঙ্কা আসার পর পরমাণু শক্তি কমিশন থেকে দুটি প্রতিনিধি দল হাওরে পাঠানো হল। তাদের রিপোর্টে দেখা গেল, ধান পচে যাওয়ায় ও ব্যবহৃত সার পানিতে মিশে মাছ মারা গেছে। কিন্তু দেখা গেল আরেক রাজনৈতিক দল বলেই যাচ্ছে যে, সেখানে ইউরেনিয়াম পাওয়া গেছে।

    “তারা বিজ্ঞানীদের কথাও মানছে না।”

    জ্ঞানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের দুর্ভাগ্য, অনেকেই আমরা যারা রাজনীতি করি তারা কিন্তু বিজ্ঞানকেও রাজনীতির অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছি। মানে বিজ্ঞানটাকেও নষ্ট করার জন্য আগাচ্ছি।”

    বাংলাদেশে বিজ্ঞান চর্চা সঠিক পথে রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “আজকাল অনেকেই বলে বাংলাদেশে নাকি বিজ্ঞান চর্চা কমে গেছে। বিজ্ঞান চর্চা যদি নাই হয়, তাহলে মৎস্য চাষে সারাবিশ্বে আমরা চতুর্থ স্থানে আসলাম কী করে?”

    ১৯৬৫ সালে যাত্রা শুরু করা বিজ্ঞান জাদুঘরকে আরও আধুনিক করতে সরকারের পরিকল্পনার কথাও জানান মন্ত্রী।

    সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেশব্যাপী ৬৪টি জেলায় দুই ধাপে ৬ মাসব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজনের পর জাদুঘর মিলনায়তনে সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিজ্ঞান জাদুঘর।

    অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক স্বপন কুমার রায়ের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব আনোয়ার হোসেন, পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. নঈম চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান কর্মকর্তা ড. এনামুল হক, জাদুঘরের সাবেক পরিচালক ড. মোবারক আলী আখন্দ।

  22. মাসুদ করিম - ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ (৭:৩৭ অপরাহ্ণ)

    দুর্নীতির দায়ে কারাগারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া

    বিদেশ থেকে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টের নামে আসা দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

    দেশজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা আর টান টান উত্তেজনার মধ্যে পুরান বকশীবাজারে জনাকীর্ণ আদালতে খালেদার উপস্থিতিতে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।

    দশ বছর আগে জরুরি অবস্থার মধ্যে দুদকের দায়ের করা এ মামলার ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের হয়েছে দশ বছর করে কারাদণ্ড।

    সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক।

    সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের স্ত্রী ৭২ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার সাজার এই রায় এসেছে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায়, ক্ষমতায় থেকে অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে ‘অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের’ কারণে।

    আদালত বলেছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলেও খালেদা জিয়ার সাজা অন্য আসামিদের তুলনায় কম হয়েছে তার ‘বয়স ও সামাজিক মর্যাদা’ বিবেচনা করে।

    আসামিদের মধ্যে তারেক মুদ্রা পাচারের এক মামলায় সাত বছরের সাজার রায় মাথায় নিয়ে গত দশ বছর ধরে পালিয়ে আছেন দেশের বাইরে। কামাল সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানও পলাতক।

    কারাগারে থাকা সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিনকে রায়ের জন্য সকালে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। সাজা ঘোষণার পর আবারও তাদের কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

    জামিনে থাকা খালেদা জিয়া দুপুরে আদালতে পৌঁছানোর পথে বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী তার গাড়ি ঘিরে মিছিল শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে।

    বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আদালতে পৌঁছানোর পর বিচারক রায় পড়া শুরু করেন। তার পুরা রায় ৬৩২ পৃষ্ঠার হলেও এর সংক্ষিপ্তসার ও সাজা ঘোষণার জন্য তিনি সময় নেন ১৫ মিনিটের মত।

    রায়ের পরপরই কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে খালেদা জিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগার ভবনে। সাবেক স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের পর খালেদা জিয়া হলেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় সরকারপ্রধান, যাকে দুর্নীতির দায়ে কারাগারে যেতে হল।

    ১৯৯১-১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা খালেদা জিয়া এই রায়ের ফলে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের ‘অযোগ্য’ হলেও হাই কোর্টে আপিল করলে যেহেতু সাজা স্থগিত হয়ে যাবে, সেক্ষেত্রে তার ভোটে দাঁড়াতে আইনি বাধা থাকবে না।

    দীর্ঘ এই বিচার প্রক্রিয়ায় মামলা থেকে রেহাই পেতে খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে গেছেন বার বার। তার অনাস্থার কারণে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিনবার এ মামলার বিচারক বদল হয়। শুনানিতে হাজির না হওয়ায় তিনবার তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করে আদালত।

    এসব কারণে দুদক ও আওয়ামী লীগ নেতারা খালেদা জিয়া ও তার আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলা বিলম্বিত করারও অভিযোগ করেছে বহুবার।

    অন্যদিকে বিএনপির অভিযোগ, ক্ষমতাসীনরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে জরুরি অবস্থার সময় দায়ের করা এই ‘মিথ্যা’ মামলাকে রায় পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। তাদের মূল লক্ষ্য রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে খালেদা জিয়াকে ‘সরাতে তাকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার নীলনকশা’ বাস্তবায়ন করা।

    রায়ের আগের দিন বুধবার গুলশানে নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনেও খালেদা জিয়া ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে নেতাকর্মীদের ‘শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক’ আন্দোলনের নির্দেশনা দেন।

    তিনি বলেন, খালেদা বলেন, “দেশবাসীর প্রতি আমার আবেদন, আমাকে আপনাদের থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা হলেও বিশ্বাস করবেন, আমি আপনাদের সঙ্গেই আছি।

    “আপনারা গণতন্ত্রের জন্য, অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, জনগণের সরকার কায়েমের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।”

    # জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর খালেদা জিয়া এক বছরসাত দিন কারাগারে থাকার সময় দুদক এ মামলা দায়ের করে। পরে এ মামলায় খালেদা ও তারেককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

    # এ মামলার বিচার শেষ করতে মোট ২৬১ কার্যদিবস আদালত বসেছে। এর মধ্যে ২৩৬ কার্য দিবসে রাষ্ট্রপক্ষে ৩২ জন সাক্ষ্য দেন।

    # আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেন ২৮ কার্য দিবস।

    # বিচারের শেষ ভাগে দুই পক্ষ মোট ১৬ কার্যদিবস যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করে।

    মামলা বৃত্তান্ত

    জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলা করে দুদক।

    তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।

    অভিযোগে বলা হয়, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এ মামলার আসামিরা।

    মামলা হওয়ার পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায় ছয় আসামির বিরুদ্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং দুদক আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ গঠন করে খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামির বিচার শুরু করেন।

    দণ্ডবিধির ৪০৯: যে ব্যক্তি তাহার সরকারি কর্মচারীজনিত ক্ষমতার বা একজন ব্যাংকার, বণিক, আড়তদার, দালাল, অ্যাটর্নি বা প্রতিভূ হিসাবে তাহার ব্যবসায় ব্যাপদেশে যে কোনো প্রকারে কোনো সম্পত্তি বা কোনো সম্পত্তির উপর আধিপত্যের ভারপ্রাপ্ত হইয়া সম্পত্তি সম্পর্কে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করেন, সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা দশ বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবে এবং তদুপরি অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবে।

    দুদক আইনের ৫(২): কোনো সরকারি কর্মচারী অপরাধমূলক অসদাচরণ করিলে বা করার উদ্যোগ গ্রহণ করিলে তিনি সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের যোগ্য হইবেন। অপরাধমূলক অসদাচরণ সংশ্লিষ্ট অর্থিক সম্পদ অথবা সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হইবে।

    রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য ও জেরা শেষে খালেদা জিয়া এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে ছয় দিন বক্তব্য দেন। পরে ১৯ ডিসেম্বর জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যুক্তি উপস্থাপন শুরু হলে প্রথম দিন দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল যুক্তি উপস্থাপন করেন।

    এরপর দশ কার্যদিবসে খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মাদ আলী, সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুর রেজাক খান, সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।

    উভয় পক্ষের বক্তব্য শেষে বিচারক এতিমখানা দুর্নীতি মামলার রায়ের জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করে দেন।

  23. মাসুদ করিম - ৩০ মার্চ ২০১৮ (৫:৪১ অপরাহ্ণ)

    প্রধানমন্ত্রীকে মিষ্টি পাঠাতে চান মির্জা ফখরুল

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাঁকুরগাঁওয়ে গিয়ে যে ভাষায় সমালোচনা করেছেন, তাতে ‘ভোট বাড়বে’ দাবি করে ‘আনন্দ’ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

    বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারাও এ নিয়ে ঠাট্টায় যোগ দিয়েছেন। মির্জা ফখরুলকে নাকি এখন তাদের ঈর্ষা হচ্ছে।

    ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৃহস্পতিবার জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় বিএনপির কর্মকাণ্ড নিয়ে বলতে গিয়ে নাম ধরেই মির্জা ফখরুলের সমালোচনা করেন।

    ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক সাংসদ এবং বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের বিমান প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা ফখরুলকে তিনি বর্ণনা করেন চরম মিথ্যাবাদী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ হিসেবে।

    বিএনপি নেত্রীর স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে শুক্রবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ আসতেই হাসতে হাসতে ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, আমি মিষ্টি পাঠাব উনার (প্রধানমন্ত্রী) কাছে। আমার অনেক উপকার করেছেন তার জন্যে। ভোট অনেক বাড়িয়ে দিয়েছেন।”

    তার এ কথার পর বিএনপির সংবাদ সম্মেলন কিছু সময়ের জন্য অনানুষ্ঠানিক আড্ডার রূপ পায়। আলোচনায় যোগ দেন দলের স্থায়ী কমিটির নেতারাও।

    খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘আমরা যারা আছি, ঈর্ষান্বিত। এভাবে উনাকে স্পন্সর করবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী!”

    আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী হাসতে হাসতে বলেন, “আন্ডারহ্যান্ড ডিলিং আছে কিন্তু!”

    এ সময় খন্দকার মোশাররফ বলেন, “শেরেবাংলা একসময় বলতেন, যদি হিন্দুরা তার সমালোচনা না করত, যুগান্তরে উনাকে গলাগালি না করত, সবাইকে তিনি জিজ্ঞাসা করতেন, আমার রাজনীতি ভুল হইতেছে কিনা, ওরা গাইলে (গালাগাল) না ক্যান?”

    আগের দিন ঠাঁকুরগাঁওয়ের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ওই যে ফখরুল ইসলাম, দিনরাত কথা বলতে বলতে… গলা ফুলায়ে কথা বলতে বলতে গলাই খারাপ হয়ে যায়। বারবার গলার চিকিৎসাও করতে হয়। মিথ্যা কথা বলার একটা সীমা আছে। সারা দিন মিথ্যা কথা বললে- এত মিথ্যা কথা বললে তো আল্লাহও নারাজ হয়।”

    আর প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বিএনপি মহাসচিবের ভূমিকার সমালোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, “বিমানমন্ত্রী যে ছিল, বিমানের কী উন্নয়নটা করেছে বলেন? বিমানের প্লেন ঝরঝর, চলে না। টাকাপয়সা সব লুটপাট। রাডারস্টেশন নষ্ট। সবকিছু ধ্বংস করে রেখে গেছে।”

    শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে আলোচনায় মির্জা ফখরুল বলেন, “কালকে আমি বলছিলাম যে এটা নিয়ে (প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের) আমি প্রতিক্রিয়া দিতে চাই না। এটা হল স্বভাব।”

    আমীর খসরু তখন বলেন, “উনি কিছু বললে তো প্রতিক্রিয়া দেবেন; গালি-গালাজের কোনো প্রতিক্রিয়া নাই।”

    সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কথা বলেন।

    তিনি বলেন, “ঠাকুগাঁও আমাদের মহাসচিবের নির্বাচনী এলাকা। প্রধানমন্ত্রী যে ভাষায় আমাদের মহাসচিবের সমালোচনা করেছেন, তিনি (মহাসচিব) নাকি মিথ্যা কথা বলেন। যিনি মিথ্যা কথা বলেন সবসময়, তিনি অন্যকেও তাই মনে করেন।”

    মওদুদ বলেন, “এতে একটা লাভ হয়েছে, আমাদের মহাসচিবের ভোট অনেক বেড়ে গেছে। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) এগুলো করতেই থাকেন।”

    এরপর অতীতের ঘটনা তুলে ধরে ব্যক্তিগত ক্ষোভের কথাও বলতে থাকেন বিএনপি আমলের আইনমন্ত্রী মওদুদ।

    “আমার বিরুদ্ধে ছয়বার সংসদে আক্রমণ করেছেন। আমরা কী আপনার সমতুল্য? আপনি হলেন প্রধানমন্ত্রী।… আসলে উনি জানেন, উনি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন নাই। এ কারণে উনার মনে ওই দুর্বলতাটা রয়ে গেছে।”

    সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মওদুদের ভাষায়, মিথ্যাচার কাকে বলে তা বাংলাদেশে না এলে কেউ বুঝবে না।

    “মিথ্যা দেশের সর্বোচ্চ লেভেলে, এমনকি জুডিশিয়ারিতেও এখন মিথ্যাচার স্থান পেয়ে গেছে। মিথ্যাকে সত্য বলা হচ্ছে, সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি সুবিধা নিয়ে ঠাকুগাঁওসহ বিভিন্ন জেলায় গিয়ে ভোটের প্রচার চালাচ্ছেন অভিযোগ করে মওদুদ বলেন, “এগুলো সবই অনৈতিক ও নির্বাচন কার্যবিধির পরিপন্থি। তিনি যদি আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নিজ খরচে জনসভা করে ভোট চাইতেন, তাহলে কারও কিছু বলার ছিল না।”

    ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাহাদাত হোসেন সেলিম। অন্যদের মধ্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুণ রায় চৌধুরী, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, লেবার পার্টির একাংশের মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদি ও এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মনজুর আলোচনায় অংশ নেন।

  24. মাসুদ করিম - ২৩ জুন ২০১৮ (৯:০৩ পূর্বাহ্ণ)

    ‘প্রথম বাংলাদেশ’ কীভাবে বিএনপির দলীয় সংগীত, প্রশ্ন শিল্পী-সুরকারের

    বিএনপি অনুমতি না নিয়েই ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ গানটি নিজেদের দলীয় সংগীত হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন গানটির শিল্পী ও সুরকার।

    শিল্পী শাহনাজ রহমতউল্লাহ ও সুরকার আলাউদ্দিন আলীর অভিযোগ, বিএনপি তাদের সঙ্গে কথা না বলেই গত প্রায় চল্লিশ বছর ধরে গানটি ব্যবহার করছে দলীয় সংগীত হিসেবে।

    শাহনাজ রহমতউল্লাহ গ্লিটজকে বলেন, “এটা কোনো দলের গান নয়। আমি গানটা কোনো দলের জন্য গাইনি।”

    তিনি জানান, সত্তর দশকের শেষভাগে বাংলাদেশ টেলিভিশনে নওয়াজিশ আলী খান প্রযোজিত ‘বর্ণালী’ অনুষ্ঠানে মনিরুজ্জামান মনিরের লেখা গানটি তিনি প্রথম পরিবেশন করেন। এরপর দেশজুড়ে গানটি ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে।

    সেই গান কীভাবে বিএনপির দলীয় সংগীত হল- এই প্রশ্ন রাখেন শাহনাজ রহমতউল্লাহ, যিনি ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরেএবার বল’ এর মত বহু জনপ্রিয় দেশাত্মবোধক গানের শিল্পী।

    তিনি বলেন, “এটা একটা দেশের গান। ‘প্রথম বাংলাদেশ, আমার শেষ বাংলাদেশ’ এখানে আমার দেশের কথা বলছি। ‘আমার আঙিনায় ছড়ানো বিছানো’-এখানে তো দেশের কথাই বলছি। তাহলে বিএনপির দলীয় সংগীত হয় কীভাবে?”

    প্রায় একই ধরনের কথা বলেছেন গানটির সুরকার আলাউদ্দিন আলী।
    গ্লিটজকে তিনি বলেন, “কীভাবে কীভাবে কখন এটা যে দলীয় সংগীত হয়ে উঠেছে এটা আমি নিজেও জানি না। পরে জানতে পারি বিষয়টা।”

    তিনি অভিযোগ করেন, “গান ব্যবহারে এখন কেউ জিজ্ঞাসা করে না।… যখন খুশি ব্যবহার করে। কোনো অনুমতিও নেয় না, জিজ্ঞেসও করে না। কোনও ধন্যবাদও জানায় না।”

    ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ গানটির গীতিকার মনিরুজ্জামান মনির বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা। গানটির শিল্পী ও সুরকারের অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য গ্লিটজ জানতে পারেনি।

    তবে চার বছর আগে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি লিখেছিলেন, ‘বর্ণালী’ অনুষ্ঠানে গানটি প্রচার হওয়ার পর তখনকার রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তাকে দুই দফা ডেকে নিয়ে কথা বলেন। ‘মোটামুটি শিক্ষিত বেকার শুনে’ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে অফিসার পদে চাকরি দেন।

    ওই সময়ই ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ গানটিকে বিএনপির দলীয় সংগীত ঘোষণা করেন জিয়া। আর তার পছন্দের গীতিকার হিসেবে পরিচিতি পান মনিরুজ্জামান মনির।

    বিএনপির ওয়েবসাইটে এখন গানটি রাখা হয়েছে ‘দলীয় সংগীত’ হিসেবে। শিল্পী, গীতিকার ও সুরকারের নামও সেখানে দেওয়া হয়েছে।

    এক প্রশ্নের জবাবে শাহনাজ রহমতউল্লাহ গ্লিটজকে বলেন, জিয়াউর রহমানের সঙ্গে গানটির বিষয়ে মনিরুজ্জামান মনিরের কোনো কথা হয়েছে কিনা তা তিনি জানেন না। আশির দশকের পর মনিরের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগও হয়নি।

    অনুমতির বিষয়ে জানতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। কথা বলতে চাননি জাসাস নেতারাও।

    গ্লিটজের প্রশ্নের জবাবে কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রেজা চৌধুরী বলেন, শিল্পী ও সুরকারের লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো গান ব্যবহার করা কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন।

    “গানটা ব্যবহারের ক্ষেত্রে তিনজনেরই লিখিত অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি না নিলে উনারা ফৌজদারি মামলাও করতে পারেন।”

    অবশ্য গানটির কপিরাইট আদৌ কারও নামে নেওয়া হয়েছে কি না- সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি রেজিস্ট্রার জাফর রেজা চৌধুরী।

    তিনি বলেন, “উনারা কপিরাইট নিয়ে না করে থাকলে, প্রপার্টি উনাদের নামে রেকর্ড না করলে আমরা এ ব্যাপারে কিছু করতে পারব না।”

    • মাসুদ করিম - ৩০ জুন ২০১৮ (৪:০৯ অপরাহ্ণ)

      গানের কোথাও ‘বিএনপি’ শব্দ আনিনি: মনিরুজ্জামান মনির

      সুরকার ও শিল্পীর অনুমতি ছাড়াই বিএনপিকে দলীয় সংগীত হিসেবে ‘প্রথম বাংলাদেশ’ গানটি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গানের গীতিকার ও জাসাস নেতা মনিরুজ্জামান মনিরের বিরুদ্ধে। গ্লিটজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, কিভাবে গানটি বিএনপির দলীয় সংগীত হয়ে উঠলো।

      গ্লিটজ: শিল্পী-সুরকারের অনুমতি ছাড়া ‘প্রথম বাংলাদেশ’ গানটি বিএনপি ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে গীতিকার হিসেবে আপনার অবস্থান কী?

      মনিরুজ্জামান মনির: এটা একটা দেশের গান, দেশপ্রেমের গান। বিশ বছর আগে কী হয়েছিল, জিয়াউর রহমান ঘোষণা দিয়েছিলেন কি না তা মনে নাই।…এটা আমার লেখা গান। বরিশালের অনুষ্ঠানে কোনো আর্টিস্ট যদি গানটা গায় তখন আমি তাকে বাধা দিতে পারি? কিসের কপিরাইট, কিসের পারমিশন। একটা হিট গানের পারমিশন লাগে নাকি? সারা দেশের মানুষ এটাকে ব্যবহার করতে পারে।

      গ্লিটজ: কিন্তু বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চাইলে তো অনুমতির দরকার হয়। গানটির অংশীদার একযোগে আপনি, সুরকার ও সংগীতশিল্পী। তারা দু’জন বলছেন বিএনপিকে অনুমতি দেয়নি। তাহলে বিএনপি কিভাবে ব্যবহার করছে?

      মনিরুজ্জামান মনির: দলীয় সংগীত হিসেবে গানটা কেন ব্যবহার করছে-সেটা ওদেরকে জিজ্ঞাসা করুন। ‘দলীয়’ শব্দটা বাদ দিয়ে এমনিতেও তো দেশের গান হিসেবে গাইতে পারে। ‘জয় বাংলা’র জন্য গাজী মাজহারুল আনোয়ারের কাছে অনুমতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ? সেটাও তো হিট গান। মুক্তিযুদ্ধের সময় পারমিশন নিয়েছিল? তাহলে ‘জয় বাংলা’ গান ওরা গায় এটার অনুমতি লাগে? কিছু কিছু গান আছে সারা দেশের মানুষ গাইতে পারে। মুখ বন্ধ যায় না। ওনারা (শিল্পী-সুরকার) ওনারটা বলুক। আমি তো বললামই।
      গ্লিটজ: তাহলে আপনি বিএনপিকে গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন?

      মনিরুজ্জামান মনির: গানের একটা শব্দও তো বিএনপির নাই। বিএনপি যদি এই গানে দেশপ্রেমের আদর্শ খুঁজে পায়-তাহলে পাক। আমরা তো গানের কথা পরিবর্তন করিনি। আমরা ‘বর্ণালী’ অনুষ্ঠানের জন্য গানটা করেছিলাম। তারপরে আর পরিবর্তন করিনি।

      যেমন, ভারতের জাতীয় সংগীত রাজপুতের আগমন উপলক্ষে লিখেছিলেন। যখন জাতীয় সংগীত করানোর কথা হয় তখন রবিঠাকুর কিছু শব্দ পরিবর্তন করলেন। আমরা কিন্তু এগুলো করি নাই। কোথাও বিএনপির শব্দ আনিনি। সেই গান দলীয় সংগীত বলে গাইলে সমস্যা কী? এটা দলীয় সংগীত করল না কী করল, করলে করতে পারে। এটা ভালো লাগছে-করতে পারে। তাই না? এটা দেশের গান, মানুষকে ফেরানো যাবে না।

      গ্লিটজ: এক নিবন্ধে লিখেছেন, গানটির বিষয়ে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে আপনার কথা হয়েছিল..

      মনিরুজ্জামান মনির: ‘বর্ণালী’ অনুষ্ঠানে গানটি প্রচারের পরই আমার সঙ্গে জিয়াউর রহমান কথা বলেছেন। ওনাদের (সুরকার-শিল্পী) সঙ্গে কথা বলার হয়তো সময় পাননি। উনি অনেক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কবি আল মাহমুদ থেকে শুরু করে ফজল শাহাবুদ্দিন, ফেরদৌস ওয়াহিদ, উজ্জল সাহেবেদের মধ্যে অনেককে টাকাও দিয়েছেন।

      হয়তো শাহনাজ রহমতউল্লাহ ও আলাউদ্দিন আলী সাহেবকে জিয়াউর রহমান সাহেব ডাকতেন। কিন্তু তার আগেই তো তিনি শহীদ হলেন। পরবর্তী পর্যায়ে কিন্তু বিএনপির অনেক অনুষ্ঠান আমরা করেছি। শাহনাজ রহমতউল্লাহও ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সামনে বহুবার ‘প্রথম বাংলাদেশ’ গানটা করেছেন। গানটা জনগণের হয়ে গেছে। এটা নিয়ে অহংকার করা উচিত।

      গ্লিটজ: জিয়াউর রহমান ‘দলীয় সংগীত’ হিসেবে গানটি কী কারণে পছন্দ করেছেন বলে মনে করেন আপনি?

      মনিরুজ্জামান মনির: প্রচন্ড দেশপ্রেম আর প্রকৃতি হলো গানের মূল উপজীব্য বিষয়। দেশকে ভালোবাসার বিষয়টি গানের কথা ও সুরে জড়িয়ে আছে। আলাউদ্দিন আলী সুরও করেছেন মারাত্মক।

      গ্লিটজ: গানটি শোনার পর মুগ্ধ জিয়াউর রহমান আপনাকে চাকরিও দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সেই নিবন্ধে…

      মনিরুজ্জামান মনির: অনেককেই চাকরি দিয়েছেন। আশি সালের দিকে একবার তিনি আমাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, কী করি? বললাম, ‘বেকার।’ বললেন, ‘কোয়ালিফিকেশন কী?’ বললাম, ‘গ্রাজুয়েশন।’ তারপরে উনি বললেন, চাকরি করবেন নাকি? বললাম, দিলে করব।

      পরে বঙ্গভবন থেকে সংস্কৃতিমন্ত্রী আমিরুল ইসলাম কালাম সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে বলা হলো। উনি আমাকে বেশ আদর-আপ্যায়ন করলেন। ওইদিনই শিল্পকলা একাডেমিতে প্রবেশনাল অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছিলাম।

      গ্লিটজ: পরে আপনি জাসাসে যোগ দিলেন কবে?

      মনিরুজ্জামান মনির: নব্বইয়ের দশকের দিকে ওরাই আমার নাম দিয়েছিল। আমার পোস্ট ছিল কি না আমি জানতামই না। তবে বর্তমান কমিটিতে আছি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে।

Have your say

  • Sign up
Password Strength Very Weak
Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
We do not share your personal details with anyone.